|
|
|
|
গড়বেতা |
প্রধান শিক্ষক-সম্পাদক বিরোধে স্কুলে অচলাবস্থা
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ডেবরার পর গড়বেতা। ফের বিরোধে জড়ালেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক। দু’জনই পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে আসছেন না প্রধান শিক্ষক। ফলে, উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পুরোপুরি বন্ধ। জেলা শিক্ষা দফতর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে।
গড়বেতা-১ ব্লকের কেশিয়া সরোজকুমার হাইস্কুলে গত সপ্তাহের বুধবার থেকে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক অরুণপ্রকাশ ঘোষের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক বাণীনাথ দাস। আগে পরিচালন সমিতির সম্পাদক ছিলেন রঙ্গরাজ গড়াই। ২০১২ সালের শেষে নতুন সমিতি তৈরি হয়। সম্পাদন হন বাণীনাথবাবু। অরুণপ্রকাশবাবু ২০০৫ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক পদে আছেন। আগের সম্পাদকের সঙ্গেও তাঁর মনোমালিন্য ছিল। তবে পরিস্থিতি কখনও এত জটিল হয়নি। চলতি বছরের গোড়া থেকে সমস্যা চরমে পৌঁছয়। অরুণপ্রকাশবাবুর বক্তব্য, “আমাকে বেআইনি কাজ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। স্কুলের সরঞ্জাম কোন দোকান থেকে কেনা হবে, তা সম্পাদক বলে দেন। সেগুলো ওঁর পছন্দের দোকান। আমি তাতে রাজি হইনি। সরঞ্জাম কেনার জন্য দরপত্র ডাকা হোক। আপত্তি কীসের?” প্রধান শিক্ষকের কথায়, “আমি সকলকে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসার নির্দেশ দিয়েছি। সেই জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের একাংশও আমার বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেন।” অভিযোগ উড়িয়ে পরিচালন সমিতির সম্পাদক বাণীনাথবাবু আঙুল তুলেছেন প্রধান শিক্ষকের দিকে। তাঁর অভিযোগ, “উনি (প্রধান শিক্ষক) কোনও কিছুর হিসেব দেন না। মিড ডে মিলের মান অত্যন্ত খারাপ। গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানাতে গেলে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁরা আমার কাছেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।” প্রধান শিক্ষককে চাপ দিয়ে বেআইনি কাজ করানোর অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সমিতির সম্পাদকের বক্তব্য, এ সব মিথ্যে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত সপ্তাহের বুধবার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সম্পাদক। তখনই বচসা বাধে। অরুণপ্রকাশবাবুর অভিযোগ, “ওই দিন সম্পাদক আমাকে হেনস্থা করেন। পরদিন আমি স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, কিছু লোক আমাকে স্কুলে ঢুকতে দেননি।” বাণীনাথবাবুর বক্তব্য, “সোমবার আমরা জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। তার আগে প্রধান শিক্ষককে ‘শো-কজ’ও করা হয়েছে।” প্রধান শিক্ষক বলছেন, “আমিও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। আর ‘শো- কজে’র জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেব।”
ক’দিন আগে ডেবরার বালিচক ভজহরি ইনস্টিটিউশনেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কেশিয়া সরোজকুমার হাইস্কুলে এই টানাপোড়েনে ব্যাহত হচ্ছে স্কুলের উন্নয়ন। কারণ, স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দু’জনের নামে, প্রধান শিক্ষক এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক। ফলে, উন্নয়নের কাজ এগোচ্ছে না। বিবদমান দু’জন পুরস্পরের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা দফতরেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিভাবকদের বক্তব্য, পরিস্থিতি যা তাতে সমস্যা সহজে মিটবে না। প্রশাসনকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে। শেষমেশ, সমস্ত কবে এই স্কুল স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরে, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|