১৬ বছরেও অসমাপ্ত বাউড়িয়ায় কমিউনিটি হল তৈরির কাজ |
রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় • বাউড়িয়া
|
পেরিয়ে গিয়েছে ১৬ বছর। উলুবেড়িয়া পুরসভার ক্ষমতাতেও বদল হয়েছে। কিন্তু বাউড়িয়ায় কমিউনিটি হল তৈরির কাজ এখনও শেষ হল না। দীর্ঘদিন ধরে থমকে রয়েছে নির্মাণকাজ। প্রকল্পটি আদৌ শেষ করা হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং সংস্কৃতিপ্রেমীরা। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য হলটি নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি মঞ্চের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সেই দাবি মেনে ১৯৯৬ সালে উলুবেড়িয়া পুরসভার তত্কালীন চেয়ারম্যান সিপিএমের বটকৃষ্ণ দাসের তত্ত্বাবধানে বাউড়িয়ার পূর্ব বুড়িখালিতে শুরু হয়েছিল ওই কমিউনিটি হল তৈরির কাজ। ভবনের মূল কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দর্শকদের বসার ব্যবস্থা হয়নি। |
এই সেই অসম্পূর্ণ ভবন।—নিজস্ব চিত্র। |
মঞ্চের কাজ অসম্পূর্ণ। ব্যালকনির কাজও বাকি। প্লাস্টারের কাজও অসমাপ্ত। ভবনের গায়ে গজিয়ে উঠেছে আগাছা। শুধু তাই নয়, ওই হল লাগোয়া যে সুপার মার্কেটটি চালু করার কথা ছিল তা-ও এখনও চালু হয়নি। অথচ, অনেক স্টলই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেখানে আসেননি। এই পরিস্থিতিতে এলাকার সংস্কৃতিপ্রেমীরা সিনেমা হল ভাড়া নিয়ে সকালের দিকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। কেউ কেউ ব্যবস্থা করছেন নির্মীয়মাণ ওই কমিউনিটি হলেরই গুদামে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ভেবেছিলেন ওই কমিউনিটি হল এবং সুপার মাকের্ট চালু হলে এলাকাটি জমজমাট হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় সন্ধ্যার পরে এলাকাটি সুনসান হয়ে পড়ে। বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই হল সংলগ্ন এলাকায় মদ, জুয়ার আসর বসে। সমাজবিরোধীরা জড়ো হয়। বাউড়িয়া স্টেশন রোড থেকে ওই হল পর্যন্ত রাস্তাটিতে দিনের পর দিন আবর্জনা সাফাই না হওয়ায় দূষণ ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সনত্কুমার জানা বলেন, “এখানে অনুষ্ঠান করার মতো ভাল হল নেই। কমিউনিটি হলটি তৈরি হওয়ার সময়ে আমাদের আশা ছিল, কিছু ভাল অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু আমরা হতাশ। হলটি কবে চালু হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।” ওই এলাকারই বাসিন্দা দিলীপ অধিকারী বলেন, “হলে যাওয়ার রাস্তাটি সব সময় জঞ্জাল-আবর্জনায় ভরে থাকে। কাক-চিলে সেই সব আবর্জনা তুলে বিভিন্ন বাড়িতে ফলে। এ ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে। কিন্তু তা বন্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের দেবদাস ঘোষ পুরসভার চেয়ারম্যান। অসুস্থ থাকায় তিনি ওই হলের ভবিষ্যত্ নিয়ে কিছু বলতে পারেনি। তবে, ভাইস-চেয়ারম্যান নাজিমা খান বলেন, “কিছু সমস্যার কারণে প্রকল্পটি সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে ঠিকই। তবে, তা বাতিল হয়নি। প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।” তবে তা কত দিনের মধ্যে, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাননি। সংলগ্ন রাস্তায় আবর্জনা জমা নিয়ে তিনি বলেন, “আবর্জনা তো অনেক জায়গাতেই জমে। পুরসভার পক্ষ থেকে এলাকা পরিষ্কার রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।” |