পচছে শস্য, চাল নষ্টে প্রথম বাংলা
ংগ্রেস খাদ্য সুরক্ষা আইনকে লোকসভা ভোটের প্রধান হাতিয়ার করতে চাইলেও, সেই আইন কার্যকর করার মতো পরিকাঠামো এই মুহূর্তে দেশে রয়েছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, গত তিন বছরে গুদামের অভাবে ১৭ হাজার টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়েছে। যা দিয়ে অন্তত ৭ কোটি মানুষের খিদে মেটানো যেত।
বিরোধীদের অভিযোগ, খাদ্য সুরক্ষার বন্দোবস্ত করার জন্য কেন্দ্রকে ৬ কোটি ২০ লক্ষ টন খাদ্যশস্যের বন্দোবস্ত করতে হবে। কৃষকদের থেকে কিনলেও তা স্বাস্থ্যকর উপায়ে গুদামজাত ও মজুত করার মতো পরিকাঠামো যে নেই, এই পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ। তথ্যের অধিকার আইনে কেন্দ্রীয় সরকারই এই তথ্য দিয়েছে। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯-’১০ থেকে ২০১৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত খাদ্য নিগমের গুদামে খোলা আকাশের নীচে পড়ে থেকে ১৭,৫৪৬ টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়েছে। যার মধ্যে চাল, ধান, গম এবং জোয়ার-বাজরার মতো সব খাদ্যশস্যই রয়েছে। ঠিক ভাবে মজুত না করায় সব থেকে বেশি চাল নষ্ট হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ২০০৯-’১০ ও ২০১১-’১২ মিলিয়ে মোট ২৩০০ টন।
খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আলোচনায় ইউপিএ-র সভানেত্রী সনিয়া আজ গাঁধী মন্তব্য করেন, ইউপিএ-সরকারই তথ্যের অধিকার আইন চালু করেছিল। সেই আইনে পাওয়া তথ্যের জন্য সরকারকেই অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয়েছে। খাদ্যশস্য নষ্টের পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই ঘটেছে। আরটিআই-আন্দোলনকারী দেব আশিস ভট্টাচার্য তথ্যের অধিকার আইনে খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়া সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিলেন। খাদ্য নিগম তাঁর প্রশ্নের উত্তরে ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অবস্থিত নিজেদের গুদামের বিষয়ে তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, প্রতি বছর খাদ্যশস্য নষ্টের হার কমলেও খাদ্য নিগমকে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। দেব আশিসের বক্তব্য, “বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাপকাঠি অনুযায়ী এক জন মানুষের বেঁচে থাকতে দিনে অন্তত ২৫০ গ্রাম খাদ্যশস্য প্রয়োজন। সেই হিসেবে এই খাদ্যশস্য দিয়ে ৭ কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা যেত।”
সংসদে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাস যুক্তি দেন, কিছু খাদ্যশস্য নষ্ট হলেও তার পরিমাণ অনেকটাই কম। সময়ের সঙ্গে খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার হারও কমেছে। গত বছর ৮ কোটি ২০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করেছিল সরকার। মজুত ও পরিবহণের সময় তার মাত্র ০.০৭% নষ্ট হয়েছে। আগের তুলনায় খাদ্যশস্য মজুতের ক্ষমতাও বেড়েছে সরকারের। পাঁচ বছর আগে মাত্র ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করত সরকার। এখন সেই জায়গায় ৭ কোটি ৪০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে মজুত করার বন্দোবস্ত করছে।
খাদ্যমন্ত্রী এই যুক্তি দিলেও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার সংসদে জানান, মজুতের পরিকাঠামোর অভাবে প্রতি বছর যে পরিমাণ খাদ্যশস্য, ফল ও শাকসব্জি নষ্ট হয়, তার মূল্য প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পরিকল্পনা কী? খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, “চার মাসের মতো খাদ্যশস্য মজুত করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করার অনুরোধ করা হয়েছে। এই চার মাসে প্রায় ৪ লক্ষ টন খাদ্যশস্য মজুত করবে হবে।” বিজেপি নেতা নরেশ গুজরালের যুক্তি, “কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই বলছে, এই বছরে মাত্র ৬০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য মজুত করার মতো নতুন পরিকাঠামো তৈরি করা যাবে। শুধু পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেই ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টন গম খোলা আকাশের নীচে পড়ে রয়েছে। মানুষের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে হলে সেই খাদ্য মজুত করারও ব্যবস্থা করতে হবে।”


অপচয়
খাদ্যশস্য ২০০৯-’১০ ২০১০-’১১ ২০১১-’১২ ২০১২-’১৩
চাল ৩,৬৮০ ১,৯০৮ ৯৩৬ ৩৮১
গম ২,০১০ ১,৯৯৭ ২,৪০২ ৭৭৭
ধান ১,০১২
জোয়ার-বাজরা ২,৪৪১
(হিসেব টনে)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.