অ্যাকাউন্ট থেকে আচমকাই কয়েক লক্ষ টাকা উধাও হয়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন গড়িয়াহাটের একটি নির্মাণ সংস্থা কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তাঁদেরই সই করা সংস্থার নামাঙ্কিত দু’টি চেক ব্যবহার করে ওই টাকা তোলা হয়েছে। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সংস্থারই এক প্রবীণ কর্মী এই ঘটনায় জড়িত।
লালবাজারের গোয়েন্দাকর্তারা জানান, চেক জালিয়াতির অভিযোগে পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৫ ) নামে ওই কর্মী -সহ আরও চার জন সত্যেন দাস, রাজু পণ্ডিত, অবিনাশ পণ্ডিত, ও হরিপদ জাটুয়াকে রবিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার আদালতে ধৃতদের ৩০ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টস বিভাগে সহকারী অফিসার ছিলেন পার্থপ্রতিম। ৭ জুন সংস্থা -কর্তৃপক্ষ দেখেন অ্যাকাউন্ট থেকে ছয় লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা উধাও। টাকার হিসেব না পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন তাঁরা। জানা যায়, রাজু পণ্ডিত নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা পড়েছে এবং সে জন্য সংস্থারই দু’টি চেক জমা দেওয়া হয়েছে। এর পরেই কর্তৃপক্ষের তরফে অবন্তিকা পসারি গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও অভিযোগ দায়েরের পরেও ওই সংস্থায় বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছিলেন পার্থপ্রতিম। গোয়েন্দা কর্তারা জানান, অ্যাকাউন্টস বিভাগের অফিসার হওয়ার সুযোগে কিছু দিন ধরে সংস্থার নামাঙ্কিত আটটি সই না করা চেক চুরি করেন পার্থপ্রতিম। তার মধ্যে দু’টি হুগলির বাসিন্দা অবিনাশ পণ্ডিতের মাধ্যমে পাঠান সত্যেন দাসের কাছে। দেন নিজের বেতনের চেকটিও। যা থেকে কর্তৃপক্ষের সই দেখে ফাঁকা চেকে তা নকল করে সত্যেন। তা রাজুর নামে জমা দেওয়া হয় ব্যান্ডেলের একটি ব্যাঙ্কে। পরে তা সেখান থেকে তুলে নেওয়া হয় বলে জানান গোয়েন্দারা। ব্যাঙ্ক থেকে ঠিকানা জেনে প্রথমে রাজুর বিহারের বাড়িতে হানা দেন গোয়েন্দারা। পরে রিষড়ার বাড়ি থেকে ধরা হয় তাকে। পুলিশ জানায়, এর পরেই খোঁজ মেলে সত্যেনের। ২০০৮ -এ এক লগ্নিকারী সংস্থার নামে টাকা তুলে জালিয়াতি করে গ্রেফতার হয়েছিল সে। সত্যেনকে জেরা করেই জানা যায় পার্থপ্রতিমের কথা। পরে অবিনাশ ও হরিপদকে ধরা হয়। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “প্রথম থেকেই মনে হয়েছিল সংস্থারই কোনও কর্মী এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। তার সঙ্গেই আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে।” |