শিশুকে ধর্ষণ করে খুনে যুবকের ফাঁসির আদেশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর |
চকোলেট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল গ্রামেরই এক যুবক। পরে গভীর রাতে নানুরের সাঁতরা গ্রামের পুকুরে মেলে আট বছরের মেয়ের ক্ষতবিক্ষত নিথর দেহ। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর।
ওই শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের
দায়ে অভিযুক্ত বিনয় মাঝির ফাঁসির সাজা হল সোমবার। বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ মানস বসু গত শুক্রবার
|
সাজা ঘোষণার
পর
বিনয় মাঝি। সোমবার।
ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী |
বিনয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। সোমবার ঘোষিত হল শাস্তি। সরকারি আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “চরম দণ্ডেরই আর্জি জানিয়েছিলাম। সাম্প্রতিক কালে প্রায়ই ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ ঘটেই চলেছে। আজকের রায় তাই খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।” এ রাজ্যে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনে ফাঁসির সাজা নতুন নয়। হেতাল পারেখ মামলায় ওই একই সাজা হয়েছিল বাঁকুড়ার ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের।
যে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এ দিন সাজা ঘোষণা হল, তার বাড়ি বীরভূমের লাভপুর থানার গোবিন্দপুরে। তবে থাকত নানুরে মামাবাড়িতে। ঘটনার দিন নিহতের বাবা-মা মেয়ের কাছে এসেছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে বিকেলে মাসতুতো বোনের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল ওই ছাত্রী। সন্ধের পরেও না ফেরায়, শুরু হয় খোঁজ। মেয়েটির বাবা-মা জানতে পারেন, চকোলেট দেওয়ার নাম করে গ্রামেরই যুবক তাকে বাঁধের পাড়ে নিয়ে গিয়েছে। বাবা ও মামার বাড়ির লোকেরা বিনয়ের বাড়িতে ছুটে যান। বিনয় বাড়িতেই ছিল। প্রথমে কিছু স্বীকার না করলেও পরে অপরাধ স্বীকার করে নেয়। পুলিশ ওই রাতেই মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে এবং বিনয়ের বাড়ি থেকে মেয়েটির রক্তমাখা জামা উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় বিনয়কে।
পুলিশ তিন মাসের মধ্যেই মামলার চার্জশিট দেয় বোলপুরের এসিজেএম আদালতে। পরে মামলাটি যায় বোলপুরের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে, সব শেষে অতিরিক্ত জেলা জজের এজলাসে। এ দিন রায় শোনার জন্য আদালতে ভিড় উপচে পড়ছিল। রায়ের পরে বিনয় শুধু বলে, “গ্রেফতার হওয়ার পরে এই প্রথম বাবা-মা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। কী জানি কী বুঝলেন!” তার বাবা-মা অবশ্য রায় ঘোষণার আগেই বাড়ি ফিরে যান।
রায় শুনে কেঁদে ফেলেন নিহতের বাবা-মা। কোলের দেড় বছরের ছেলেকে কোনও রকমে সামলে মেয়েটির মা বলেন, “ওইটুকু ফুলের মতো মেয়ের সর্বনাশ করে খুন করেছিল। ফাঁসির আদেশ হওয়ায় ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার আগে দু’বার ভাববে।”
গণধর্ষণ, কারাদণ্ড: ২০০৯-এ কলকাতার তপসিয়ায় এক গণধর্ষণের মামলায় দু’জনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিলেন শিয়ালদহ অতিরিক্ত জেলা জজ উত্তম সাহু। সরকারি কৌঁসুলি সুধীন জানা সোমবার জানান, অতীন মল্লিক ও মহসিন আলম ওরফে পাপ্পু নামে দুই যুবক উত্তর কলকাতার মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডের এক যুবতীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে গণধর্ষণ করেছিল। |