শক্তিগড়ের কাছে জি টি রোডে একটি পরিত্যক্ত পেট্রোল পাম্পের কাছে খুন হলেন বেসরকারি লগ্নি সংস্থার এক কর্মী। তাঁর মোটরবাইক, ল্যাপটপ ইত্যাদিও উধাও হয়ে গিয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, নীলাদ্রি বিশ্বাস (৩৫) নামে ওই যুবকের বাড়ি বর্ধমান থানার বড়শূলে টোটাপাড়া গ্রামে। রবিবার গভীর রাতেও তিনি কাজ থেকে না ফেরায় বাড়ির লোকেরা খোঁজাখুজি শুরু করেছিলেন। রাত ৩টে নাগাদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে তাঁরা দেখেন, নীলাদ্রির মৃতদেহ পড়ে। মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ওই আঘাতের চিহ্ন গুলির দাগও হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। খুনের মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশের কাছে অভিযোগে নিহতের ভাই পলাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি দিনই লগ্নি সংস্থার টাকা আদায়ের কাজ সেরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরতেন মোটরবাইকে বাড়ি ফিরতেন। রবিবার রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত তাঁর মোবাইল বেজেছে। কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। পলাশের দাবি, নীলাদ্রির সঙ্গে একটি ল্যাপটপ, ডেটা কার্ড, লগ্নি সংস্থার মানি রিসিট বইও ছিল। কিন্তু সে সবের খোঁজ মেলেনি। হাসপাতালেই তাঁরা জানতে পারেন, বর্ধমান ও শক্তিগড়ের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত পেট্রোল পাম্পের কাছে জি টি রোডের উপরে দেহটি পড়ে ছিল। ঘটনাস্থলে প্রচুর রক্তের দাগও দেখা গিয়েছে। ল্যাপটপ, মোটরবাইক, মোবাইল ইত্যাদি ছিনতাইয়ের সময়েই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে নীলাদ্রির পরিবারের অনুমান।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জি টি রোডের ওই অংশে প্রায়ই লুঠতরাজ চালায় দুষ্কৃতীরা। আগেও সেখানে বহু বাইক ও অন্য গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই করা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রেই কেউ ধরা পড়েনি। দিনের বেলাতেও পথচারীরা ভয়ে-ভয়ে ওই এলাকা পেরোন। এর আগে পালশিট সেতুর উপরেও ছিনতাইকারীরা বাধা পেয়ে গুলি চালিয়েছিল। সে কারণে গোটা এলাকায় প্রতি রাতেই পুলিশের টহলদার ভ্যান থাকার কথা। কিন্তু রবিবার রাতে যে তা ছিল না, সে কথা কবুল করেছেন বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “নিয়মিত ওখানে টহলদার ভ্যান থাকে। কিন্তু ওই রাতে ওই ভ্যানটি কাছাকাছি একটি গ্রামে অভিযান চালাতে গিয়েছিল। তাই কিছুটা সময়ের জন্য রাস্তাটি অরক্ষিত ছিল।” এই নিরাপত্তাহীনতার দায় কে নেবে, তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। |