প্রত্যাশা মতোই বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি হলেন কালনার দেবু টুডু। সাড়ে তিন দশকের ইতিহাসে তিনিই প্রথম অ-বাম নেতা যিনি জেলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত কাঠামোর চুড়োয় বসতে চলেছেন।
বর্ধমান জেলা সভাধিপতির আসনটি এ বার তফসিলি জনজাতির জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু মজার ব্যাপার, দেবুবাবু সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোক হলেও জিতেছেন অসংরক্ষিত আসন থেকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলের বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁকে সভাধিপতি মনোনীত করেন।
এমনিতে কালনার গীতারানি হাঁসদা ছাড়া তেমন সদস্য তৃণমূলের হাতে বিশেষ ছিল না। কিন্তু পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতার ভারেই দেবুবাবু তাঁকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন।
দেবু টুডু।
ফাইল চিত্র।
|
তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের এলাকা থেকে যখন সভাধিপতি নির্বাচিত হলেন, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি নির্বাচন করা হয়েছে কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটকের এলাকা থেকে। ওই পদে বসেছেন জামুড়িয়ার প্রিয়া সূত্রধর। স্বপনবাবুর নিজের এলাকা, পূর্বস্থলীর নাদনঘাট থেকে নির্বাচিত অরুন্ধতী সেন হয়েছেন দলের সভানেত্রী। গত জেলা পরিষদে তিনি বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন।
স্বপনবাবু বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আর সব জেলার সঙ্গে আমাদেরও জেলা সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি মনোনীত করেছেন। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে একটি দিন ধার্য করা হবে যে দিন পদাধিকারীরা শপথ নেবেন।” দলের অন্যতম রাজ্য নেতা তথা বর্ধমানের পরিদর্শক অলোক দাস বলেন, “সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি শপথ নেওয়ার পরেই আমরা কর্মাধ্যক্ষদের মনোনীত করব।”
তৃণমূল জেলা পরিষদ দখল করার পরে সম্ভাব্য সভাধিপতি হিসেবে কালনারই গীতারানি হাঁসদার নাম শোনা যাচ্ছিল। চূড়ান্ত আলোচনায় অবশ্য তাঁর নাম ওঠেনি বলে দল সূত্রের খবর।
স্বপনবাবু বলেন, “দেবু টুডু টানা ২৫ বছর ধরে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে দলের প্রার্থী হয়েছেন এবং জিতে আসছেন। গত বার তিনি কালনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতাই তাঁকে সভাধিপতি করেছে।” দেবুবাবুর প্রতিক্রিয়া, “দল যে আমার উপরে আস্থা রেখেছে, তাতে আমি কৃতজ্ঞ।”
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ দিন জেলার গ্রামীণ তৃণমূলের দু’টি শাখা সংগঠনের সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন সুভাষ মণ্ডল। অলোকবাবুর দাবি, তাঁর জায়গায় নতুন সভাপতি হয়েছেন শান্তনু কয়ারা। তবে স্বপনবাবুর দাবি, ওই পদে এখনও পরিবর্তন হয়নি। জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শঙ্করী দে-কে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পদে বসেছেন বর্ধমান-১ ব্লকের গার্গী নাহা। মহিলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হয়েছেন নূরুন্নেসা বেগম। |