নির্দল কাঁটা নিয়েই ভোটে চলল তৃণমূল
নোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে গেল। কিন্তু বর্ধমান পুরভোটে ‘নির্দল’ হয়ে দাঁড়ানো তিন বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকে অনেক চেষ্টাতেও নিরস্ত করতে পারল না তৃণমূল। সোমবারের বারবেলা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দলের কাঁটা রয়েই গেল। মোট আটটি ওয়ার্ডে বিক্ষু্ব্ধরা দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। বাকি পাঁচটিতে ৫, ৮,১০,১৮ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ নেতারা অবশ্য শেষমেশ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। মাত্র চারটি ওয়ার্ড ২, ১১, ১৭ ও ২২ নম্বরে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে সরাসরি লড়াই হচ্ছে।
এ দিন সকাল থেকেই বর্ধমান উত্তর মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন জেলা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের কাছে বারবার ফোন যাচ্ছিল। চেষ্টা চলছিল, তাঁরা ডেকে এনে মনোয়নন প্রত্যাহার করানোর। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় সবচেয়ে হেভিওয়েট নেতা সুজিত ঘোষ ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর অনুগামীদের দাবি, তাঁকে নানা ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। প্রয়োজনে গ্রেফতার করানো হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। দুপুরে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
নাম চূড়ান্ত হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচারের ফ্লেক্স তৈরি।—নিজস্ব চিত্র।
১০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন প্রবীণ নেতা পরেশ সরকার। দলের এক রাজ্য নেতার মতে, “সুজিতবাবু নির্দল হিসেবে লড়লে আমাদের প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য নেমে আসত। মাঝখান থেকে সিপিএমের জয়ের সম্ভাবনাই প্রবল হত।” সুজিতবাবুর বক্তব্য, “সকাল থেকেই দলের রাজ্য তথা সর্বভারতীয় স্তরের নেতারা ফোন করতে শুরু করেছিলেন। আমাকে নানা ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দলের নেতাদের অনুরোধেই আমি শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ালাম।”
জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, “সুজিতবাবুর মতো জবরদস্ত প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে পারাটা বড় সাফল্য। কিন্তু তিনটি ওয়ার্ডে আমরা বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের সরাতে পারিনি। এর মধ্যে ১৫ ও ২১ নম্বরের প্রার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। কিন্তু ১৪ নম্বরে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো শেখ খয়রাত আলি ওরফে নন্দু আমাদের বেগ দেবে। ওঁকেও প্রত্যাহার করাতে পারলে ভাল হত। ” তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী শঙ্খশুভ্র ঘোষের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রাক্তন শিক্ষক তারাপদ দাসেরও কিছুটা জনসমর্থন আছে। জন্মলগ্ন থেকেই তিনি দলে রয়েছেন। এঁরা ছাড়া আর যে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আলেয়া বেগম, ৮ নম্বরে শম্পা পাল, ১৮ নম্বরে কৌশিক রায় ও ২৬ নম্বরের সাব্বির আহমেদ খোন্দেকার এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ও দিকে, কংগ্রেসের এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অভিযোগ তুলেছে তাঁর দল। জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “দলবিরোধী কার্যকলাপের জেরে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
গুসকরা পুরসভায় আবার ৪ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে।
তবে গুসকরার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের নেতা চঞ্চল গড়াই বলেছেন, “ওই কাজ আমাদের নয়। আমরা লড়েই ভোটে জিততে চাই।” গুসকরায় এক মাত্র নির্দল প্রার্থী লক্ষ্মণ দাস বৈরাগ্য দাঁড়িয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ই পুরপ্রধান পদের অন্যতম দাবিদার।
পুরভোটের খাতা
বর্ধমান পুরসভা
তৃণমূল ৩৫ সিপিএম ২৬ কংগ্রেস ৩০ বিজেপি ১১
ফরওয়ার্ড ব্লক ৪ আরএসপি ৩ সিপিআই ১
গুসকরা পুরসভা
সিপিএম ১৬ তৃণমূল ১৬ বিজেপি ১১
কংগ্রেস ৩ ফরওয়ার্ড ব্লক ১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.