আগবাড়িয়ে চলে আসুন কালদিঘিতে |
পাখি দেখার নেশায় গঙ্গারামপুর ও আশপাশে যাঁরা ঘুরে বেড়ান তাঁদের কাছে কালদিঘি বড় প্রিয় জায়গা। শীতকালে গ্রে ল্যাগগুজ, গাড়োয়াল প্রভৃতি পরিযায়ী পাখিদের ঝাঁকের সঙ্গে ভিড় করে মরাল, কুট বা কটন টিলের মসো পাখিরা। আবার এই ভিড়েই মিশে থাকে বিভিন্ন ধরনের কমোরান্ট ডার্টার, গ্রে হেরন, পারপেল হেরনের মতো পাখিরা। মার্চের প্রথম দিকে পরিযায়ীদের ভিড় কমতেই দিঘি চলে যায় মুরহেন, ব্রোঞ্জ উইংড জারানা, ফেজেন্ট টেইলও জারানা, লিটল গ্রিব প্রভৃতি পাখিদের হাতে। সামনের ক’টা মাস তাদের প্রজনন ঋতু। ছাড়া দিঘির দু’ধারে গাছগাছড়াতে হরেক কিসিমের ছোট ছোট পরিযায়ী পাখি ও স্থানীয় পাখিরা তো আছেই। |
জনবহুল একটা জায়গার মাঝখানে পড়ে থাকা একটা দিঘিতে পাখিদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা যথেষ্ট কঠিন। আর স্থানীয়দের সাহায্য ছাড়া তো এটা একপ্রকার অসম্ভব। এর জন্য যেটা সবার আগে দরকার, সেটা হল, স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, দিঘির পরিবেশ ও পাখির সংরক্ষণের মাধ্যমে যাতে একটা বিকল্প আয়ের উৎস খুলতে পারে তার ব্যবস্থা করা। দক্ষিণ দিনাজপুরকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য যে সব সরকারি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে তাতে কালদিঘি এবং এই পাখিরা যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হচ্ছে। সরকারি পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হলে কালদিঘিও হয়তো ইকো টু্যরিস্ট স্পট হিসাবে গড়ে উঠবে। আর ইকো ট্যুরিজম থেকে আয়ের উৎস খুললে স্থানীয়রাই হয়তো এই দিঘির পরিবেশ ও পাখিদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এই পরিকল্পনা তখনই সফল হবে যখন পাখিপ্রেমী ও পরিবেশপ্রেমী ট্যুরিস্টরা ভিড় জমাবে কালদিঘি ও দক্ষিণ দিনাজপুরের অন্য সম্ভাবনাময় ইকো ট্যুরিস্ট স্পটগুলিতে। তাই আগবাড়িয়ে চলে আসুন কালদিঘিতে।
চন্দন পান্ডে। দক্ষিণ দিনাজপুর
|
পঞ্চাশ বছরে উত্তর মালদহের দশটি ব্লকের প্রায় সতেরো লক্ষ জনসংখ্যা সমন্বিত বিস্তীর্ণ এলাকায় স্টেট ব্যাঙ্কের একটিও বাড়তি শাখা খোলা হয়নি। পঞ্চান্ন বছর আগে সদরপুর, চাঁচল, সামসী ও হরিশচন্দ্রপুরে যে ৪টি শাখা খোলা হয়েছিল, এখনও তাই রয়েছে। শিক্ষক পেনশন, শিক্ষকদের বেতন, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী, বিধবা ভাতা, বেকার ভাতা, স্বনিযুক্তি প্রকল্পের ঋণ প্রভৃতি জনসেবামূলক কাজ কয়েকশো গুণ বেড়ে গিয়েছে অথচ ব্যাঙ্কের আয়তন বাড়েনি। একটি মাত্র চাঁচলের এস বি আই ব্রাঞ্চে বত্রিশ হাজার অ্যাকাউন্ট হোল্ডার? সারা ভারতে এর নজির আছে? এর সঙ্গে ব্যাঙ্ককে সংখ্যালঘুদের ঋণ ও স্টাইপেন্ডের বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে, করতে হচ্ছে ছাত্রদের অ্যাকাউন্ট খোলার কাজও। শিক্ষামন্ত্রীর ফতোয়া ছিল, জিরো ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে। |
ছাত্রছাত্রী বলে কথা! পড়াশোনা যেমনই হোক, শূন্য ব্যালান্স নিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার অধিকারী হয়ে গেল তারা। ক্রমবর্ধমান গ্রাহকের চাপে স্টেট ব্যাঙ্কের পরিষেবা সঙ্গীন হয়ে উঠেছে। তার উপর সংখ্যালঘুদের ঋণের চাপ ও শূন্য ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ। চাঁচল, হরিশচন্দ্রপুর, বারদুয়ারি, কনুয়া, রতনপুর হাট, মালতিপুর হাট, আশাপুর, খরবা, মালদহ, তুলসী হাটা, মশালদহ, গাজল, দেওচড়াই, ভবানীপুর, ভালুকা, রতুয়া, সামসীতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কোনও শাখাই নেই। নিদেনপক্ষে এ টি এম-ও নেই। দরখাস্ত জমা পড়ার ছয় মাসের মধ্যে আমানতকারীরা চাঁচল ব্রাঞ্চের পাশ বই খুলতে পারছেন না। দীর্ঘ দিন থেকেই চাঁচল এস বি আই এবং ইউ বি আই-তে নিদারুণ কর্মী-সঙ্কট চলছে। এই সমস্ত এলাকায় খুব তাড়াতাড়ি এসবিআই-এর শাখা খোলা প্রয়োজন। তাতে অন্তত সতেরো লক্ষ মানুষের কিছুটা উপকার হতে পারে।
শান্তনু বসু। মালদহ |