হাতেখড়ির কর্মশালায় গুচ্ছ প্রশ্ন প্রধানদের
বাল্যবিবাহ রোধে পুরুলিয়া জেলার মেয়েরাই দেশকে পথ দেখিয়েছে। তবুও এখনও এই জেলা থেকে ওই প্রথা দূর করা যায়নি। তাই সদ্য জনপ্রতিনিধি হয়ে সেই সমস্যা কী ভাবে দূর করবেন প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে জানতে চাইলেন পঞ্চায়েতের প্রধান।
শনিবার থেকে ধাপে ধাপে পুরুলিয়া শহরে শুরু হয়েছে নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানদের আবাসিক কর্মশালা। জেলা পরিষদের সভাঘরে শনিবার কর্মশালায় তখন এলাকার সমস্যার উপরে আলোকপাত ও পঞ্চায়েতের কর্ণধার হিসেবে তাঁদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। হঠাৎ পুরুলিয়া ১ ব্লকের সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা বাউরি প্রশ্ন করেন, “বাল্যবিবাহ রোধে তো আমাদের ভূমিকা নিতে হবে?” পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রশিক্ষক সৌভিক সিংহ রায়ের জবাব, “নিশ্চয়ই। এ ক্ষেত্রে আপনাদের দায়িত্ব রয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে এলাকায় সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।” এর পরেই তিনি ব্ল্যাকবোর্ডে প্রধান-উপপ্রধানদের কর্মসূচির তালিকায় সংযোজন করেন ‘বাল্যবিবাহ রোধ’। আগে ওই বোর্ডে লেখা হয়েছিল, সরকারি কর্মসূচির সঠিক রপায়ণ, প্রকল্পের সঠিক উপভোক্তা নিরূপণ, কর্মী ও জনপ্রতিনিধির সময়জ্ঞান, এলাকা সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা, সম্পদের সঠিক ব্যবহার, ছেলেমেয়ের মধ্যে বিভেদ ঘোচাতে প্রচার চালানো ইত্যাদি।
চলছে কর্মশালা। —নিজস্ব চিত্র
এর পরে প্রশিক্ষক জানতে চান, আর কোন ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরা জোর দিতে চাইছেন? এক প্রধান বলেন, “আমার এলাকায় খেলাধুলোর মান বাড়াতে চাই।” তা শুনে বোর্ডে লেখা হল- ‘খেলাধূলায় উৎসাহ প্রদান’।
তথ্য জানার অধিকার নিয়েও প্রধানদের অনেকেই উৎসাহ দেখান। এক প্রধান জানতে চান, আমরা কী ভাবে তথ্য দেব। তার জন্য আগে থেকে কী কী প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রশিক্ষক তাঁদের জানান, প্রধান ও উপপ্রধানকে পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজ নখদর্পণে রাখতে হবে। কাগজপত্রেও তা লিখে রাখতে হবে। তাতে কাজের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই প্রয়োজনে কাউকে সে তথ্যও দেওয়া যাবে।”
শিবিরে আসা জনপ্রতিনিধিদের আধিকারিকরা বোঝান, তাঁরাই গ্রামবাসীর প্রতিনিধি। এলাকার প্রকৃত উন্নয়ন কী ভাবে করা যায়, তাঁদেরই সে দায়িত্ব নিতে হবে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে এলাকার উন্নয়নের জন্য চিন্তা ভাবনা করতে হবে। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতেক কোন কর্মীর কী দায়িত্ব, সভা পরিচালনা কী ভাবে হবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় প্রধানদের কী ভূমিকা থাকবে, কী ভাবে তাঁরা নিজস্ব সম্পদ তৈরি করবেনইত্যাদি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করা হয়।
জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত পরিচালনায় প্রধান, উপপ্রধানদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই কাজ শুরুর আগে তাঁদের সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিতে এই শিবির। শনিবার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী শিবিরে এসে প্রধান ও উপপ্রধানদের নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে এবং প্রয়োজনে বিডিও, এমনকী তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন।”
পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিমলকান্ত মাহাতো বলেন, “জেলাশাসক বলে গিয়েছেন, পরিকল্পনা তৈরি করে তা ডায়েরিতে লিখে রাখতে হবে। তারপর কাজে এগোতে হবে। তা হলেই কাজে সাফল্য আসবে। কত প্রকল্প রয়েছে, তার নাম ও উপযোগিতা সম্পর্কে জানতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.