বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে পৌঁছে টেনিসের ফ্যাব ফোর যেন ফ্যাব থ্রি হয়ে গিয়েছে! তা হলেও মনে হচ্ছে, যে লোকটা যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের বাছাই তালিকায় সাত নম্বরে নেমে গিয়েছে, সে-ই এখনও বেশি হাততালি পাবে।
রজার ফেডেরার সোমবার নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামবে গত এক দশকের মধ্যে ওর কেরিয়ারের সর্বনিম্ন বাছাই রূপে। ঘটনা হচ্ছে, উইম্বলডনে আকস্মিক বিদায় থেকেই ওর সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। বয়সটাও বত্রিশ বলে প্রশ্ন উঠছে, ফেডেরারের আর আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার ক্ষমতা আছে কি না! আমি মনে করি, রজার যদি ওর বুদ্ধিদীপ্ত টেনিসটা খেলে তা হলে এখনও যে কাউকে হারিয়ে দেবে। আর যেহেতু নিউইয়র্কের আবেগ-উষ্ণতাকে ফেডেরার ভালবাসে, সে কারণে নিজের সেই ভিন্টেজ খেলা দেখিয়ে হয়তো সেমিফাইনালে উঠবে।
তবে খেতাব জেতার সুযোগ তিন শীর্ষ বাছাইয়েরই আছে। ড্র অনুযায়ী একটা কোয়ার্টার ফাইনালে রজার-রাফা লড়াই হওয়ার কথা। তবে সেটা নিয়ে আমি বাড়াবাড়ি রকমের ভাবতে রাজি নই। উইম্বলডনেও একই সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুই ভদ্রলাকই তার আগেই ছিটকে যায়। নাদালকে অবশ্য এখন হার্ডকোর্টেও ওর সেরা ফর্মে দেখাচ্ছে! যে প্রচণ্ড গতিতে প্রতিটা বলের জন্য ছুটছে, বোঝা যাচ্ছে হাঁটুর ফিটনেস নিয়েও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। জকোভিচ হল সেই প্লেয়ার যারা গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য নিজের সেরাটা জমিয়ে রাখে আর সময় এলে উজাড় করে দেয়। ফ্লাশিং মেডোর সারফেস ওর প্রিয়। আমার একটাই চিন্তা, ইদানীং নোভাক যেন মারের বিরুদ্ধে জেতার কৌশলটা ভুলে গিয়েছে! দু’জনের মধ্যে খেলা দু’টো গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালেই কিন্তু নোভাক হেরেছে। তবে এ বার মারেকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ও যদি ফাইনালে ওঠে তা হলে নিশ্চয়ই ভাববে, এর পর ফাইনালে যাকে পাব তাকেই হারাব!
মারের ওপর আবার যতই খেতাব অটুট রাখার দায়িত্ব থাক, গত বছর এই সময় ও গ্র্যান্ড স্ল্যামে যতটা চাপে থাকত এখন নিশ্চয়ই তার ছিটেফোঁটা নেই। মারে এখন ডাবল গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন। যার একটা আবার ঐতিহাসিক উইম্বলডন খেতাব! যে অনুভূতিটা জীবনের সেরা ফর্মে থাকা মারেকে এ বার নিউইয়র্কে বরং সাহায্যই করবে।
মেয়েদের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন অনেকে। অন্তত ছেলেদের বিভাগের তুলনায় বেশি। শারাপোভার অনুপস্থিতিতে যদিও সেরেনা আর আজারেঙ্কাকেই কাগজ-কলমে হটফেভারিট দেখাচ্ছে, কিন্তু এই বিভাগে লড়াই অনেক বেশি। তৃতীয় বাছাই রাডওয়ানস্কা সব সময় বড় নামদের বিরুদ্ধে নিজের সেরাটা খেলে। আমার দেশের দুই মেয়ে অ্যাঞ্জেলিক কের্বার আর যখন-তখন মেজাজ অদলবদল হওয়া সাবিন লিজিকির দিকেও চোখ রাখছি। শেষজন নিজের দিনে বিশ্বের যে কাউকে হারাতে পারে। |