নিষেধ সত্ত্বেও লোভ সামলাতে পারেননি। নদীর জলে সাঁতার দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দুই বন্ধু। সেটাই কাল হল। দু’জনের মধ্যে এক জনকে টেনে নিয়ে গেল কুমির। নদীর পাড়ে তখন ১৫ জন দর্শক। কুমিরের দুই চোয়ালের মধ্যে বন্ধুকে যন্ত্রণায় চিৎকার করতে দেখেও কিচ্ছুটি করতে পারেননি তাঁরা। অস্ট্রেলিয়ার ‘কুখ্যাত’ মেরি নদীতে ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার। কুমিরের অতর্কিত হামলার শিকার চব্বিশ বছরের যুবকটির সন্ধান এখনও মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটোরির রাজধানী ডারউইন থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে মেরি নদীর উপরেই একটি রিসর্টে কোনও বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে জমায়েত হয়েছিল প্রায় ষোলো-সতেরো জনের একটা দল। তাঁদের মধ্যে হঠাৎ মেরি নদীতে সাঁতার কাটতে চলে গেলেন দু’জন। বাকিরা বারণ করেছিলেন। কারণ তথ্য বলছে, নোনাজলের কুমিরের বসবাসের অন্যতম প্রিয় আস্তানা হিসেবে কুখ্যাত মেরি নদী। পুলিশি রেকর্ডের হিসেব মতো, এ নদীতে প্রতি দু’কিলোমিটারে একটি বড় কুমিরের দেখা মেলে।
১৯৭০ সাল থেকে তাদের সংরক্ষণের ব্যাপারে বাড়তি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তার পর থেকেই ব্যাপক হারে বেড়েছে কুমিরের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানুষের উপর হামলার ঘটনাও। গত ডিসেম্বরে একটি ন’বছরের ছেলেকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল প্রায় চার মিটার লম্বা কুমির। ঠিক এক মাস পরে সাঁতার কাটতে গিয়ে একই ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় সাত বছরের একটি মেয়ে। দু’টি ঘটনাই ঘটেছে নর্দান টেরিটোরিতে। আর তার পর থেকেই তাই নদীতে সাঁতার কাটার ব্যাপারে নিয়মের কড়াকড়ি করা হয়।
শনিবারও সাঁতার কাটাতে নিষেধ করা হয়েছিল ওই ব্যক্তি ও তাঁর বন্ধুকে। কিন্তু সে কথা কানে না তুলে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন দু’জন। পাড়ে দাঁড়ানো পনেরো জন দেখতে থাকেন, কী ভাবে ঠিক তাঁদের দু’জনের পিছনে তাড়া করেছে পেল্লায় আকারের এক কুমির। আর তার পরেই ওই যুবককে চোয়ালের ফাঁকে নিয়ে সেটি চোখের পলকে মিশে যায় জলের গভীরে। ইতিমধ্যেই একটি কুমিরকে হত্যা করেছে পুলিশ। যদিও এটিই সেই খুনি কুমির কি না, নিশ্চিত নন তাঁরা। রবিবারও সন্ধান চলছে। |