কালনায় ভাগীরথী
ভাঙছে পাড়, আতঙ্কে দুই গ্রাম
বার জমছে আশঙ্কার মেঘ।
ক্রমেই এগিয়ে আসছে ভাগীরথী। ভাঙছে পাড়। ভাঙনের আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে কালনা-১ ব্লকের ভাগীরথীর দু’পাড়ের কালীনগর ও পেয়ারিনগর গ্রামের বাসিন্দাদের।
কৃষ্ণদেবপুর পঞ্চায়েতের একটি গ্রাম পেয়ারিনগর। গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে ভাগীরথী। এক সময়ে এই গ্রামে থাকত প্রায় দু’শো ঘর পরিবার। তাঁদের অনেকেই গ্রাম ছেড়েছেন ভাঙনের ভয়ে। ভাঙনের ভয় উপেক্ষা করে এখন গ্রামে থাকেন মাত্র ৫২ ঘর মানুষ। এদের সবারই বাড়ি কোনও না কোনও সময় ভেঙেছে ভাগীরথীর আপন খেয়ালে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, আগে এই গ্রামের বাসিন্দাদের প্রধান জীবিকা ছিল চাষ। কিন্তু ভাঙন শুরু হওয়ার পর ভাগীরথীর গর্ভে মিলিয়ে গিয়েছে জমি। নিজেদের জমি হারিয়ে তাঁরা অন্যের জমিতে শুরু করেছেন খেতমজুরি। কেউ গিয়েছেন অন্য পেশায়।
এগিয়ে আসছে নদী। পেয়ারিনগর গ্রামে তোলা নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, নদী যেখানে ভাঙছে তার একশো ফুটের মধ্যেই রয়েছে নলকূপ ও মসজিদ। যেটুকু জমি আছে সেখানেই চলছে চাষ। গ্রামে রয়েছে সেচ প্রকল্প। তবে সেই প্রকল্পের পাশের জমিতেও দেখা দিয়েছে ফাটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যে কোনও সময় তলিয়ে যেতে পারে প্রকল্পের যন্ত্রাংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙন আটকানোর জন্য নদীর পাড়ে কিছু বাঁশের খাঁচা ফেলা হয়। ভিতরে থাকে বোল্ডার। কিন্তু অনেক সময়ই তাতে কাজ হয় না। স্থানীয় বাসিন্দা আজিরা বিবির আশঙ্কা, “ভাঙনে যে কোনও সময়ে তলিয়ে যেতে পারে বাড়ি। এর আগেও ভাঙনে বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। এ বারেও তলিয়ে গেলে জানি না কোথায় গিয়ে দাঁড়াব।” নদীর কাছেই মনোহারি জিনিসের দোকান চালান সাবিরউদ্দিন শেখ। তিনি জানালেন, “নদীর জল যে ভাবে বাড়ছে, বড় বিপদ ঘটতে পারে।”
পেয়ারিনগরের মতোই অবস্থা ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের কালীনগরের। স্থানীয় মানুষের কাছে এই গ্রাম ‘কবাডি গ্রাম’ বলে পরিচিত। কারণ, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের অনেক কবাডি খেলোয়াড় উঠে এসেছেন এই গ্রাম থেকেই। ভাগীরথীর লাগাতার ভাঙন গ্রাস করছে কালীনগরকেও। গ্রামের চাষযোগ্য বহু জমিই চলে গিয়েছে ভাগীরথীতে। স্থানীয় বাসিন্দা ও জাতীয় পর্যায়ের কবাডি খেলোয়াড় হাবিব শেখ বলেন, “সম্প্রতি ১২টি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। গোটা গ্রামে যেভাবে ভাঙন বাড়ছে তাতে আমরা খুবই চিন্তায় আছি।”
গ্রামের ভাঙনের কথা স্বীকার করেছেন পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সেচমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। চেষ্টা চলছে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.