একদিকে বকেয়ার দাবিতে ঠিকাদারদের আন্দোলন, অন্য দিকে বাজেট পাস নিয়ে বিতর্কের জেরে পুরসভায় আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবে সাহায্য চাইলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। শনিবার শিলিগুড়িতে পূর্ত দফতরের বাংলোয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি সে কথা জানিয়েছেন। পুরসভায় কী সমস্যা রয়েছে তা লিখিত ভাবে মেয়রকে জানাতে বলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। যদিও ইতিমধ্যেই পুরসভার মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক ঠিকাদারদের সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়ে গৌতমবাবুকে চিঠি দিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন সুজয়বাবুও।
মেয়র গঙ্গোত্রীদেবী বলেন, “আমরা শীঘ্রই সমস্যার কথা মন্ত্রীকে জানিয়ে দেব।” পুরসভার এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসকেই দায়ী করছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “সরকারের তরফ থেকে কোন নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। বাজেট পাশ করতে না পারায় কী কী কাজ তাঁরা করবেন তা জানিয়ে সরকারের কাছে পুরসভাই চিঠি দিয়েছিলেন। সেই হিসেবে রাজ্য সরকার কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছে।” |
অচলাবস্থার জন্য কার্যত গত ৯ মাস ধরে বোর্ড মিটিং না হওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষকেই দুষেছেন মন্ত্রী। তার যুক্তি, বোর্ড মিটিং না হওয়ার জেরেই বিল্ডিং প্ল্যান পাশের মতো পুরসভার নিজস্ব আয়ের কয়েকটি পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
এ দিন মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করে পুরসভার বিস্তারিত খোঁজ নেন মন্ত্রী। সেখানে অনেকেই মেয়র এবং তার দলকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেন। এই অবস্থায় ফের ৩১ অগস্ট মাসিক সভা ডেকেছেন চেয়ারম্যান নান্টু পাল। অবৈধ ভাবে নান্টুবাবু চেয়ারম্যান হয়েছেন, অভিযোগ তুলে তাঁর ডাকা মাসিক সভায় যোগ দিচ্ছে না বামেরা। কংগ্রেসের কাউন্সিলররাও গত কয়েক মাস ধরে যাচ্ছেন না। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করায় নান্টুবাবুর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মামলাও করেছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। নান্টুবাবুর ডাকা সভায় কংগ্রেস কাউন্সিলররা যাবেন কি না তা নিয়ে এখনও তাঁরা সিদ্ধান্ত নেননি। তবে বোর্ড সভায় যাওয়ার আর্জি মেয়র এবং মেয়র পারিষদ সুজয়বাবুকে বলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। মেয়র বলেন, “যা পরিস্থিতি তাতে কাজ করতে সমস্যার কথা সকলেই জানেন। আলোচনা করে তা সমাধানের চেষ্টা করছি।” এ দিনও বকেয়ার দাবিতে পুরসভার ঠিকাদার সংস্থা অবস্থান বিক্ষোভ করে। আলোচনা করে আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন মেয়র। বকেয়া না মিললে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের মুখপাত্র বিজন দাস। |