|
|
|
|
আধার কার্ড ছাড়া ছাত্রবৃত্তি মিলবে কি, বিভ্রান্তি রাজ্যে |
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী ও
নুরুল আবসার • কলকাতা |
চলতি বছরে ছাত্রবৃত্তি পাওয়া নিয়ে ধন্দে পড়েছেন সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা। পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, এ বছর থেকে ওই বৃত্তি পেতে হলে আধার কার্ড থাকাটা বাধ্যতামূলক। অথচ রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও ওই
কার্ড পাননি।
নিগমের সিদ্ধান্ত আদৌ সঙ্গত কি না সেই প্রশ্ন ওঠায় নিগমের কর্তারা মুখে জানাচ্ছেন, আধার কার্ড না থাকলেও আবেদন করা যাবে। সরকারি সংস্থাটির ওয়েবসাইটে কিন্তু সে কথা জানানো হচ্ছে না। ফলে ‘পোস্ট ম্যাট্রিক’ ও ‘প্রি-ম্যাট্রিক’ ছাত্রবৃত্তির জন্য আবেদন করা ও পাওয়া নিয়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা বিভ্রান্ত। যার জেরে অন্যান্য বছরের তুলনায় ‘প্রি-ম্যাট্রিক’ বৃত্তির জন্য অনেক কম আবেদনপত্র জমা পড়েছে এ পর্যন্ত।
খোদ মুখামন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ে হাতে থাকা দফতরের অধীন একটি নিগম আধার কার্ড নিয়ে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানোয় বিস্মিত অনেকেই। শুরু হয়েছে প্রতিবাদও। এ নিয়ে নিগম সভাপতি আবু আয়েস মণ্ডলের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের জানিয়েছে, আধার কার্ড না থাকলে পোস্ট ম্যাট্রিক ছাত্রবৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে না। আমাদের ওয়েবসাইটেও তাই বাধ্যতামূলক কথাটা লেখা হয়েছে। তবে আমরা কেন্দ্রকে বলব, পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় আধার কার্ড হয়নি। যাদের আধার কার্ড নেই, তাদের আবেদনও গ্রাহ্য করার অনুমতি দেওয়া হোক।” পরে তিনি বলেন, “আধার কার্ড না থাকলেও আবেদন করা যাবে। কার্ড থাকা না-থাকার কথা আবেদনপত্রে উল্লেখ করতে হবে।” সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের সচিব পর্যায়ের এক অফিসারও জানিয়েছেন, আধার কার্ড না থাকলেও আবেদন করা যাবে। পরে কেন্দ্রের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হবে।
প্রি-ম্যাট্রিক বৃত্তির ক্ষেত্রে আধার কার্ডের ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে নিগম। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোতালেব আলি সর্দার বলেন, “কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আলোচনাও চলছে। সমাধান একটা হয়ে যাবে মনে হয়।” আবেদনপত্র জমা নেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ অগস্ট। এই সময়ও বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত
দেন তিনি। |
|
কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন, নিগম কর্তাদের মুখের কথা না ওয়েবসাইট, কোনটা ঠিক? ছাত্রছাত্রীরা তো ওয়েবসাইট দেখেই আবেদন করে। ওই নির্দেশিকার কেন পরিবর্তন করা হচ্ছে না?
গোটা দেশে আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে রয়েছে ন্যাশন্যাল পপুলেশন রেজিস্ট্রেশন দফতর। তাদের এক কর্তার বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র হাওড়া ও কোচবিহার জেলায় আধার কার্ড বাধ্যতামূলক হতে পারে। কারণ, ওই দুই জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিত্ত নিগম কেন গোটা রাজ্যের জন্য তা বাধ্যতামূলক করছে, তা বলতে পারব না।” কিন্তু হাওড়া ও কোচবিহার নিয়ে ওই দাবিও ঠিক কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। নিগম এ দু’টি জেলায় আধার কার্ড বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করায় হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকে প্রি-ম্যাট্রিক বৃত্তির জন্য অন্যান্য বছর যেখানে হাজার দুই আবেদনপত্র জমা পড়ে, এ বার ২২ অগস্ট পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৮-এ। ব্লকেরই নলপুরের বাসিন্দা আব্দুল হাফিজ মোল্লা বলেন, “পরিবারের সবার ছবি তোলা হলেও শুধু আমার স্ত্রীর কার্ড এসেছে। আধার কার্ড না-থাকায় ছেলের বৃত্তির জন্য আবেদনও করতে পারিনি।” একই সমস্যা জেলার অন্যত্র এবং কোচবিহারেও। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ১ ও ২ এবং কোচবিহার ১ ও ২ ব্লক ছাড়া বাকি ৮টি ব্লকে আধার কার্ড দেওয়ার কাজ শুরুই হয়নি।
নিগম প্রতি বছর প্রি-ম্যাট্রিক ও পোস্ট-ম্যাট্রিক সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের যে বৃত্তি দেয় তার বেশির ভাগটাই আসে কেন্দ্র থেকে। রাজ্য সরকারের দাবি, পালাবদলের পরে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে রাজ্যের দেড় লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়া পোস্ট ম্যাট্রিক বৃত্তি পেয়েছেন। এ বার তা দু’লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু নিগমের ওয়েবসাইট ও কর্তাদের দু’রকম বয়ানে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তাতে আবেদনকারীর সংখ্যা কি কমে যাবে না?
আবু আয়েশের জবাব, “আমরা জানি কেমন করে কাজ করতে হয়।”
|
পুরনো খবর: আবশ্যিক নয় আধার কার্ড
|
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু দু’জনের
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিঙ্গুর ও বাঁকুড়া |
অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক সাইকেল আরোহীর। শনিবার সিঙ্গুরে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত পরিতোষ ধাড়ার (৪০) বাড়ি স্থানীয় সিংহল পাঠান এলাকায়। কলকাতায় রোগী ভর্তি করে ঝাড়খণ্ডে ফিরছিল ওই অ্যাম্বুল্যান্স। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি পরিতোষবাবুকে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। অ্যাম্বুল্যান্সটিকে আটক করেছে পুলিশ। চালক পলাতক। এ দিনই সকালে বাঁকুড়ার মেজিয়ার জোড়াপুকুর এলাকায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় সাইকেল আরোহী এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়। মৃত ছাত্র কৌশিক মণ্ডলের (১৭) বাড়ি মেজিয়ার ভাঁড়রা গ্রামে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মেজিয়া হাইস্কুলের ওই ছাত্রের। |
|
|
|
|
|