ভাঙা বাঁধ দেখতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন মন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পাঁশকুড়া |
কংসাবতী ব্যারাজের ছাড়া জলের তোড়ে ভেঙেছে বাঁধ। জলমগ্ন পাঁশকুড়া। জল ঢুকেছে তাঁর নিজের ওয়ার্ডেও। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে এলাকা গিয়ে মেজাজ হারালেন পাঁশকুড়ার বাসিন্দা রাজ্যের জলসম্পদমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। মন্ত্রীকে প্রকাশ্যেই বলতে শোনা গেল, “সেচ দফতরের আধিকারিকদের গাফিলতি ও তৎপরতার অভাবেই এই পরিস্থিতি।” পরক্ষণেই অবশ্য সামলে নিয়ে তিনি দায় চাপান বাম আমলের ‘ভেঙে পড়া’ সেচ ব্যবস্থার উপরে। এ প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন ঘটনা ঘটলে সকলে সেচ দফতরের দিকেই আঙুল তোলে। যথাসাধ্য করছি।” |
|
কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
দুর্গতরা অবশ্য অতশত বোঝেননি। তাই সামনে সৌমেনবাবুকে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। জলবন্দি গোলাম মোস্তাফা, শেখ শাজাহানদের অভিযোগ, “মন্ত্রী, নেতারা থাকা সত্ত্বেও বাঁধ মেরামতি করা হচ্ছে না।” বিক্ষোভের কথা অবশ্য মানতে চাননি সৌমেনবাবু। তিনি বলেন, “কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই কাজ করেছে। আমি বারবার এলাকায় গিয়েছি। দুর্গতদের পাশেই আছি।” এ দিন বিকেলে এলাকায় যান সেচমন্ত্রী। তবে তাঁকে ঘিরে আর বিক্ষোভ হয়নি।
গত রবিবার থেকে প্রবল বৃষ্টির জেরে এমনিতেই পাঁশকুড়া-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল। তার মধ্যে বিপদ বাড়িয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় পাঁশকুড়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গড়পুরুষোত্তমপুর লাগোয়া রানিহাটিতে কংসাবতী নদীর পূর্ব দিকের বাঁধ ভেঙে যায়। তার জেরে পাঁশকুড়া পুরসভার ৬টি ওয়ার্ড এবং আশপাশের ৪০টি গ্রাম এখন জলের তলায়। বাঁধের ১৫০ ফুট এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শনিবার দুপুরে জল উঠেছে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কেও। ২৬টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। নদীবাঁধেও বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ক’দিন আগেই পাঁশকুড়ায় এসে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বাঁধগুলোতে সেচ দফতরের নজরদারি রয়েছে।” তারপরেও বাঁধ ভাঙা আটকানো যায়নি। শনিবার সন্ধ্যায় দুর্গত এলাকায় পৌঁছে সেচমন্ত্রী বলেন, “বস্তায় ইট ভরে অস্থায়ী ভাবে বাঁধ মেরামতি চলছে।”
জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকাও। ঘাটাল পুরসভার ১২টি ওয়ার্ড-সহ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত এবং দাসপুর-১ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামের মানুষ জলবন্দি। কেশপুর ও ডেবরার শতাধিক গ্রামও জলমগ্ন। |
পুরনো খবর: নদীর বাঁধ উপচে জলমগ্ন নতুন এলাকা |
|