|
|
|
|
বহিরাগতরা দায়ী, রাজের মন্তব্য নিয়ে সরগরম রাজনীতি |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মুম্বইয়ে চিত্রসাংবাদিকের গণধর্ষণ নিয়ে রাজনীতির চেনা ছকেই হাঁটলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে। ফলে, উত্তপ্ত হয়ে উঠল ধর্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
গত কাল এক টিভি চ্যানেলে রাজ বলেন, “বহিরাগতদের মুম্বইয়ে আসা নিয়ন্ত্রিত না হওয়াতেই এই ধরনের অপরাধ বাড়ছে।” তাঁর বক্তব্য,“হরিবংশ রাই বচ্চনের মতো মানুষ মুম্বইয়ে এলে আমি লাল কার্পেট পেতে অভ্যর্থনা জানাতে রাজি। কিন্তু, মুম্বই-দিল্লির মতো শহরে নানা জায়গা থেকে অপরাধীরা এসে ভিড় করলে অপরাধ বন্ধ হবে না।” রাজের মতে, কেবল দিল্লি-মুম্বই নয়, সব শহরেই বহিরাগতদের আসার উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।
রাজের মন্তব্য থেকেই বোঝা গিয়েছিল, বালাসাহেব ঠাকরের উত্তরাধিকার মেনে এই ঘটনা নিয়েও বহিরাগত-বিরোধী রাজনীতির পথে হাঁটছেন রাজ। আগেও বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে আসা মানুষকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব শুক্ল বলেন, “মনে হচ্ছে উনি আবার এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন। এই মন্তব্যের কোনও অর্থ হয় না।” কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপমের কথায়, “মুম্বই এখন বেদনাহত। এই পরিস্থিতিতে কোনও সম্প্রদায়কে আঘাত করে মন্তব্য করার প্রয়োজন ছিল না।” তবে রাজ্যের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদও।
রাজের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী শাবানা আজমি ও অভিনেতা ওম পুরির মতো ব্যক্তিত্বরাও। আজ কলকাতায় শাবানা বলেন, “বহিরাগতদের সম্পর্কে রাজের এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। মহারাষ্ট্রে যে সব অপরাধ ঘটে তার ৭০ শতাংশই গ্রামের দিকে হয়। সেখানে তো বহিরাগতরা নেই।” এ দিনই কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন ওম পুরিও। তাঁর বক্তব্য, “এ ভাবে কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এই ধরনের অপরাধ করলে যে কঠোর শাস্তি পেতে
হবে সেই ভয়টা মানুষের মনে ঢোকানো প্রয়োজন।”
মুম্বই কাণ্ড নিয়ে আজ সরগরম ছিল সংসদও। লোকসভায় প্রথমে বিষয়টি তোলেন বিজেপি সাংসদ গোপীনাথ মুন্ডে।
মুন্ডে দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব খারাপ। কেন্দ্রের উচিত এই ঘটনা নিয়ে এখনই রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া। কেন্দ্রকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মুন্ডে বলেন, “কয়েক মাস আগে দিল্লি গণধর্ষণের শিকার তরুণীর স্মৃতিতে ১ হাজার কোটি টাকার নির্ভয়া তহবিল তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। এখনও সেই তহবিলের জন্য কোনও অর্থের ব্যবস্থা করা হয়নি।” মহারাষ্ট্র নিয়ে মুন্ডের মন্তব্যের বিরোধিতা করতে শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদরা। পরে অবশ্য সংসদীয় মন্ত্রী কমল নাথ জানান, রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সংসদে বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে।
মুম্বই গণধর্ষণ নিয়ে তিনি ‘ব্যথিত’ বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী। বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের মতে, এই অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। |
|
|
|
|
|