রাজনৈতিক বন্দির সংজ্ঞা বদলে বিল আনছে রাজ্য
রাজনৈতিক বন্দিদের সংজ্ঞা আরও কঠোর করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কোনও নিষিদ্ধ বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য কাউকে আর রাজনৈতিক বন্দির মর্যাদা দিতে চায় না তারা। এই মর্মে বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনেই সংশোধনী বিল আসছে।
বিধানসভার বর্ধিত বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে সোমবার। চলবে মোট তিন দিন। তার মধ্যেই মঙ্গলবার বিধানসভায় পেশ হওয়ার কথা ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল কারেকশনাল সার্ভিসেস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৩’। সংশোধনাগার বিষয়ক রাজ্যের বর্তমান আইনের ২৪ নং ধারার একটি অনুচ্ছেদ সংশোধন করাই এই বিলের মূল উদ্দেশ্য। সংশোধনীতে বলা হচ্ছে, ঘোষিত ভাবে সন্ত্রাসবাদী কোনও গোষ্ঠীর সদস্য বা কোনও নির্দিষ্ট কারণে নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ গ্রেফতার হলে তিনি রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে আর গণ্য হবেন না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য কোনও আন্দোলনের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মকে এক করে দেখা উচিত নয় বলেই এই সংশোধনী, এমন ব্যাখ্যাই দেওয়া হয়েছে বিলে।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সর্বদল বৈঠক। শুক্রবার বিধানসভায়। —নিজস্ব চিত্র
রাজনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, এই বিল পাশ হয়ে গেলে মাওবাদীরা আপাতত আর রাজনৈতিক বন্দির মর্যাদা পাবেন না। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় সিপিআই (মাওবাদী) এখন নিষিদ্ধ সংগঠন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল বামফ্রন্টকে হঠানোর জন্য মাওবাদীদের সঙ্গে তলে তলে সমঝোতা করেছিল বলে লাগাতার অভিযোগ করে এসেছে বামেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাজনৈতিক বন্দি সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী সেই প্রচার মোকাবিলার হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা।
বিলে পরিষ্কার বলা হয়েছে, কেবল গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা গণ-বিক্ষোভে যোগ দিতে গিয়ে কেউ ভারতীয় দণ্ডবিধি বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনও আইনের আওতায় গ্রেফতার হলে বা দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে ধরা হবে। তবে কোনও সাম্প্রদায়িক, আঞ্চলিক বা ভাষা-জাতের ভিত্তিতে কোনও গোষ্ঠী অন্য কোনও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে তাকে গণ-বিক্ষোভ বলে ধরা হবে না বলে বিলের খসড়ায় বলা হচ্ছে। এমতাবস্থায় গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ের আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক বন্দির তালিকায় পড়বেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে।
অধিবেশনের আগে বিধানসভায় শুক্রবার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ৬টি বিল ছাড়া আরও কোনও নির্দিষ্ট কার্যসূচির কথা বলা হয়নি। বামেদের প্রস্তাব ছিল, বেসরকারি প্রস্তাবের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হোক। এসইউসি-র বিধায়ক তরুণকান্তি নস্কর প্রস্তাব দিয়েছিলেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য। কিন্তু কোনও প্রস্তাবই মানেনি সরকার। এ সব নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা না করতে দেওয়া সরকারের ‘দ্বিচারিতা’ বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা চেয়ে কংগ্রেসের দাবির অবশ্য এ দিন কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। অন্যত্র পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় এই বিষয়ে শুনানিতে থাকতে পারবেন না বলে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব অবশ্য স্পিকারের কাছে দাবি করেছেন, এক সঙ্গে নয়, আলাদা করে তাঁদের বক্তব্য শুনতে হবে। স্পিকার জানিয়েছেন, এই অধিবেশন সেরে তিনি বিদেশ সফর থেকে ফিরলে ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে আবার এই বিষয়ে কথা হবে। তবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরোধী আসনে বসার আবেদন আপাতত গ্রাহ্য হয়নি। স্পিকারের বক্তব্য, এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছিলেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি (যিনি বিধায়ক নন)। বিধানসভার নিয়ম মেনে মোর্চার পরিষদীয় দলের তরফে আবেদন করা হলে তা বিবেচিত হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.