চার বছর আগে বড়বাজার এলাকার জমা জল দ্রুত বার করতে জগন্নাথ ঘাটের কাছে পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করে কলকাতা পুরসভা। ঠিক হয়েছিল, ২০১১-র প্রথম দিকে কাজ শেষ হবে। কিন্তু নানা সমস্যার জন্য এই কাজে দেরি হওয়ায় নিকাশির সমস্যা মেটেনি। সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিতে ওই এলাকা ফের জলমগ্নও হয়েছে। যদিও পুরসভার দাবি, এক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেব বলেন, “বড়বাজার এবং জোড়াসাঁকো এলাকার জমা জল দ্রুত বার করতে এই পাম্পিং স্টেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই ব্যস্ত রাস্তায় নিকাশির লাইন বসাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। ফলে, কাজ ঢিমেতালে এগোচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি এই কাজ শেষ হবে।”
|
কলকাতার অন্যতম নিচু এলাকা জোড়াসাঁকো ও বড়বাজার। একটু বৃষ্টিতেই এখানে জল জমে যায়। জল বেরোতেও অনেক সময় লাগে। এখানকার জমা জল প্রধানত রবীন্দ্র সরণির ব্রিক স্যুয়ার দিয়ে সরাসরি পামার বাজার খালে গিয়ে পড়ে। পুরসভার নিকাশি দফতর একটি সমীক্ষা করে দেখেছে, পামার বাজার পাম্পিং স্টেশনের ক্যাচমেন্ট এলাকা হল উত্তরের শ্যামবাজার থেকে শুরু করে স্ট্র্যান্ড রোডে হুগলি নদীর মুখ পর্যন্ত। বড়বাজার বা মধ্য কলকাতার জমা জলের কিছু অংশ যদি একটি স্বতন্ত্র পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে হুগলি নদীতে ফেলা হয়, তা হলে পামার বাজার পাম্পিং স্টেশনের উপরে চাপ কমে। ফলে জোড়াসাঁকো ও বড়বাজারের জমা জল অনেক আগে বেরোবে। বাসিন্দাদের দুর্ভোগও অনেক কমবে।
গত বাম পুরবোর্ডের আমলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জগন্নাথ ঘাটে নদীর ধারে একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৫ কিউসেক ক্ষমতার তিনটি পাম্প বসানো হবে। দু’টি পাম্প কাজ করবে। একটি পাম্প অকেজো হয়ে পড়লেও তৃতীয় পাম্পটি হাতে থাকবে। |
এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। কাজও শুরু হয়। কিন্তু জনবহুল বড়বাজার এলাকায় পাম্পিং স্টেশনের সঙ্গে নিকাশি লাইনের সংযোগ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। নিকাশির লাইন বসানো সম্ভব হচ্ছে না বলে পুরকর্তৃপক্ষ জানান। প্রথম দিকে পাম্পিং স্টেশন তৈরি করতে গিয়েও সমস্যা হয়। তাই প্রকল্প পিছিয়ে যেতে থাকে।
কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের মুখ্য বাস্তুকার অমিত রায় বলেন, “নদীর ধারে যে জায়গায় এই পাম্পিং স্টেশন তৈরির কথা ছিল সেখানে প্রচুর বালি থাকায় কাজ শুরু করতে সময় লাগে। এ ছাড়া চার দিকেই ‘হেরিটেজ’ বাড়ি রয়েছে। সেগুলি যাতে কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়েও লক্ষ রাখতে হচ্ছে। বর্ষা এবং পুজোর সময়ে শহরে এমনিতেই কাজ করা সম্ভব নয়। তবে আগামী বছরের বর্ষার আগে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।” |