বকেয়া দাবি করে কাজ বন্ধের হুমকি ঠিকাদারদের
হরবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা মেনে সবে শিলিগুড়ির মুর্গিহাটা ও লাগোয়া এলাকায় কংক্রিটের রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পুজোর আগেই সেই রাস্তা হংকং মার্কেট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে পুরসভা ঘোষণা করেছে। এমতাবস্থায়, পুরনো বকেয়ার দাবিতে শিলিগুড়ি পুরসভার সমস্ত রাস্তা ও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ঠিকাদারদের একটি সংগঠন। ফলে, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের কারণ, ঠিকাদারদের আন্দোলনের জেরে ওই রাস্তার কাজ অসমাপ্ত থেকে গেলে প্রতি পদে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে।
শুধু তাই নয়, ঠিকাদারদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ঠিকাদারদের এক পক্ষ চাইছেন, বিধান মার্কেট সহ বাণিজ্যিক এলাকায় যে সব রাস্তা, নির্মামের কাজ পুরসবা করছে তা চালিয়ে যাওয়া হোক। তবে পুরসভার উপরে চাপ বাড়িয়ে বকেয়া আদায়ের জন্য অবস্থান-বিক্ষোভ করার পক্ষপাতি তাঁরা। সেই সঙ্গে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভার আর্থিক ক্ষমতা বেঁধে দেওয়ায়র যে নির্দেশ রয়েছে তা বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে শিথিল করার আর্জি জানানোর কথা ভাবছেন ঠিকাদারদের একাংশ। অবশ্য ঠিকাদারদের অন্যপক্ষ কিন্তু, শহরের সব কাজ বন্ধ করে দিতে চাইছেন। ওই অংশ জানিয়ে দিয়েছেন, তিন দিনের মধ্যে বকেয়া টাকা না পেলে কোনও কাজ করবেন না।
এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে দায়ী করেছেন পুরসভার পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে যে ১৬ টি ব্যাপারে পুরসভা টাকা খরচ করতে পারবে বলা হয়েছে, তার মধ্যে ঠিকাদারদের বকেয়া টাকা দেওয়ার বিষয়টির উল্লেখ নেই। এতে জটিলতা বাড়ছে। আমরা টাকা দিতেই চাই। ঠিকাদার সংগঠন তাদের দাবির বিষয়টি নগরোন্নয়ন দফতরে জানালে সমস্যা মেটার রাস্তার খুলতে পারে।” তবে বিধান মার্কেট সহ শহরের অন্যান্য এলাকার রাস্তার কাজ পুজোর আগে বন্ধ করে দেওয়া হলে শহরবাসীর ক্ষোভ চরমে পৌঁছতে পারে বলে সুজয়বাবুও আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, “বকেয়া পাওয়ার হক ঠিকাদারদের রয়েছে। সে জন্য পুরসভা একা কিছু করতে পারবে না। রাজ্য সরকারের তরফে পুরসভাকে সেই বকেয়া মেটানোর ক্ষমতা দিতে হবে। যদি সত্যিই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় তা হলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে গোটা ঘটনা ব্যাখ্যা করব।”
এই ব্যাপারে তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা পূর্ত বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলেন, “আমরা পূজোর সময় টাকা দিয়েছিলাম, তার পর মার্চে টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু এই বোর্ড অচল হয়ে পড়েছে। কোন আলোচনা, মাসিক বৈঠক কিছুই হয় না। তবে কি করে টাকা দেবে? এই পরিস্থিতি বর্তমান বোর্ডকেই সামলাতে হবে।”
শিলিগুড়ি পুরসভার লাইসেন্স প্রাপ্ত ঠিকাদারের সংখ্যা অন্তত ৬০০ জন। তাঁরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ঠিকাদার সংগঠনের নেতা বিজন দাস বলেন, “আমরা মিটিং করে তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত বকেয়া টাকা দিতে হবে। দ্বিতীয়ক, টাকা না পাওয়া অবধি আমরা কোন টেন্ডারে অংশ নেব না। তৃতীয়ত, সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেব।” কিন্তু, পুজোর মুখে সব কাজ বন্ধ করে দিলেই কী সমস্যার সমাধান হবে? কোনও মহলের চাপে বিধান মার্কেট সহ কয়েকটি এলাকার কাজ বন্ধ করানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না সেই প্রশ্নও পুরসভার অন্দরে রয়েছে। যদিও ঠিকাদারদের তরফে কোনও চাপের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁরা জানান, বিধান মার্কেট শুধু নয়, বকেয়া টাকা না পেলে সব কাজই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান বলেন, “ঠিকাদারদের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.