ময়নাগুড়ির বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস কর্মীদের একটি অংশ কামতাপুর পিপলস পার্টিতে (কেপিপি) যোগ দিতে যাচ্ছেন। প্রথমে নির্বাচন ও পরবর্তীতে পঞ্চায়েত বোর্ড দখল নিয়ে তৃণমূলের চাপের মুখে পড়লেও ব্লক ও জেলা স্তরের নেতারা এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র সাধারণ কর্মী নয়, একই অভিযোগ তুলে বামফ্রন্টের নির্বাচিত বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য এবং নেতা কেপিপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। আজ, বুধবার জলপাইগুড়ি শহরে মহামিছিল করবে কেপিপি। দলের তরফে জলপাইগুড়ি বিভাগীয় কমিশনারকে পৃথক কামতাপুর রাজ্য ও ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা। সেখানে বামফ্রন্টের স্থানীয় স্তরের কিছু নেতা ও কর্মী দলত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন বলে কেপিপি’র দাবি।
কেপিপি-র সাধারণ সম্পাদক নিখিল রায় বলেন, “তৃণমূল বিরোধী অনেক পঞ্চায়েত সদস্য যোগাযোগ করছেন। ওরা কামতাপুরি আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। দলীয় স্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।” আর দলের সভাপতি অতুল রায় বলেন, “উত্তরবঙ্গ জুড়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্য যোগাযোগ শুরু করেছেন। দলের নেতাদের অবশ্য সতর্ক হতে বলেছি। হুটহাট কাউকে নেওয়া হবে না।”
দলত্যাগের ঘটনার কথা অস্বীকার করেননি জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু।
তিনি বলেন, “সর্বত্র সন্ত্রাসের পরিবেশ রয়েছে। আমরা সব পুলিশ-প্রশাসনকে জানাচ্ছি। কোথাও কোথাও দলবদল হচ্ছে ঠিকই। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ময়নাগুড়ির মতো বেশ কিছু এলাকায় দল তৃণমূলের আক্রমণের শিকার হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে সবই জানানো হয়েছে। এর বেশি কী করার আছে।” যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ ঊড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি চন্দন ভৌমিক। তিনি বলেন, “সন্ত্রাস কোথাও হয়নি। আর তাতে কে বা কারা কেপিপিতে চলে যাচ্ছেন তা জানি না।”
ময়নাগুড়ির পদমতি এলাকার অন্তত ৩৫টি আরএসপি এবং সিপিএম সমর্থক পরিবার মঙ্গলবার সভা করে অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে তাঁদের উপরে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার চলছে শহরের নেতাদের সবই জানিয়েছেন কিন্তু নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা হয়নি। পদমতি এলাকার আরএসপি এবং সিপিএম সমর্থকদের কয়েকজন জানান, সন্ত্রাসের কথা আরএসপির ময়নাগুড়ি বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী সবই জানেন। তাঁকে নির্বাচনের আগে থেকে জানানো হয়েছে। সিপিএম সমর্থকরা জানান, ঘটনার কথা দলের ময়নাগুড়ি জোনাল কমিটির নেতাদের জানানো হয়েছে। বিধায়ক বলেন, কর্মীরা তো সন্ত্রাসের কথা জানাচ্ছে। কিন্তু ওদের নিয়ে সভা করব সেই পরিবেশও নেই। শুনেছি অনেকে কেপিপিতে যোগ দিয়েছে। আমরা ওদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। সিপিএমের ময়নাগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ ঘোষ বলেন, “আমরা পাশে নেই, এটা ঠিক কথা নয়। ব্লক জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা চলছে। অভিমানে কেউ কেপিপিতে চলে গেলেও আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।” |