পিছিয়ে মহকুমার সংশোধনাগার
সময় পেরিয়েও সর্বত্র শুরু হয়নি বন্দিদের আইনি সহায়তার কাজ
রাজ্যের নানা সংশোধানাগারে বন্দি হয়ে রয়েছেন যাঁরা, তাঁরা অনেকে ঠিক মতো জানেন না, কী অপরাধে ধরা হয়েছে তাঁদের। কে তাঁর উকিল, কী সাজা হতে পারে, ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনাই বা কতটা। লিখতে-পড়তে না-জানা, নিজের কথা বুঝিয়ে বলতে না-পারা এমন বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা বড় কম নয়। এঁদের ন্যায়বিচার পেতে সহায়তার জন্য জেলা ও মহকুমা সংশোধনাগারে ‘লিগ্যাল এড ক্লিনিক’ গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (নালসা)। মঙ্গলবার, ২০ অগস্ট, ২০১৩ ছিল সেই নির্দেশ রূপায়ণের শেষ দিন।
কী ছিল সেই নির্দেশে? ২০১১ সালে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (সালসা)-কে বলা হয়, রাজ্যের সব জেলা ও মহকুমা সংশোধনাগারে ‘লিগ্যাল এড ক্লিনিক’ করতে হবে। যেখানে বন্দিদের আইনি সহায়তাদান করবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। এঁরা অবশ্য পুরোদস্তুর আইনজীবী নন, ‘প্যারা লিগ্যাল ভলেন্টিয়ার।’ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, সমাজকর্মী, চিকিত্‌সক , যে কেউ এই কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাঁদের নিয়োগ করা হবে। শুধু সংশোধনাগারেই নয়, গ্রাম পঞ্চায়েত, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিয়ে ‘লিগ্যাল এড ক্লিনিক’ গঠনের কথা বলা হয়। এমনকী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আইনি সচেতনতা বাড়ানোর জন্য স্কুল কলেজগুলিতেও এই স্বেচ্ছাসেবকদের পরিষেবা চালু করতে বলা হয়। ওই স্বেচ্ছাসবকরা নিজের এলাকায় শিশু শ্রম, নারী পাচারের মতো বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
সময়সীমা পেরোল, কতটা এগোল কাজ?
রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, জেলা ও মহকুমা আদালত এবং গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট পাঁচশোরও বেশি লিগ্যাল এড ক্লিনিক খোলা হয়েছে। হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু কাজ বাকি রয়েছে অনেক। নানা জেলায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, জেলা স্তরের সংশোধনাগারে ক্লিনিক চালু হলেও, মহকুমা স্তরে এখনও ওই পরিষেবা শুরু করা যায়নি।
মেদিনীপুর জেলা সংশোধনাগারের রেজিষ্টার প্রকাশ বর্মন বলেন, “স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আবেদনকারী ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের জন্য সাক্ষাত্‌কার নেওয়া হবে।” তবে ঘাটাল মহকুমার উপ-সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই লিগ্যাল ক্লিনিক শুরু হয়ে গিয়েছে। সুপার পুলক মণ্ডল জানান, ঘাটাল বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরাই ক্লিনিকে আইনি পরামর্শ দিচ্ছেন বন্দিদের।
জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে লিগ্যাল ক্লিনিক শুরু করা হয়েছে গত মাসে। শিলিগুড়ি সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “ আইনি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত লিগ্যাল ক্লিনিক শুরু করা হবে।” চার মাস আগেই উত্তর দিনাজপুর জেলা সংশোধনাগারে লিগ্যাল ক্লিনিক শুরু হয়েছে। জেলা জজ এই পরিষেবার দেখভাল করেন। চারজন আইনজীবীও এই ক্লিনিকে পরামর্শ দেন।
মুর্শিদাবাদ জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডালসা) সচিব তথা সহকারি জেলা জজ প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ হলেও, তিনটি মহকুমা সংশোধনাগারে নিয়োগের প্রস্তুতি চলছে।” এছাড়াও মুর্শিদাবাদে প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’জন করে প্যারা লিগ্যাল ভলেন্টিয়ার (পিএলভি) নিয়োগ করার কথা রয়েছে।
মুর্শিদাবাদ ‘ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এড সার্ভিসেস অথরিটি’ (ডালসা)-র অন্যতম সদস্য তথা এ জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর দেবাশিস রায় বলেন, “জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ৫০৮ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রয়োজন। তার মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর ৪০০ জনকে পিএলভি হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। বাকি ১০৮ জনকে মনোনীত করার জন্য দ্বিতীয় পর্বের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলছে।” সংস্থা সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ২, ফলতা পঞ্চায়েত সমিতি ও জয়নগর ২, বিষ্ণুপুর ১ পঞ্চায়েতেও ক্লিনিক খোলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.