|
|
|
|
পুনরুজ্জীবন চাইলে পরিবর্তন চাই বামেদের, মত বর্ধনেরও
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দু’বছরের মধ্যে তৃণমূলের দিক থেকে দলে দলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবেন, এমন আশা তাঁরা করেননি। সেই দিক থেকে রাজ্যে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচন বামেদের জন্য একেবারে বিপর্যয় নয়। তবু পঞ্চায়েতের ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে বামেদের পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে নিজেদের বদলানোর পক্ষে সওয়াল করলেন সিপিআইয়ের প্রবীণ নেতা অর্ধেন্দু ভূষণ বর্ধন। বাম নেতৃত্ব বা সংগঠনে রদবদলও সেই পরিবর্তনের অঙ্গ বলেই মনে করছেন বর্ধনেরা।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করতে কলকাতায় দু’দিনের বৈঠকে বসেছিল সিপিআইয়ের রাজ্য কার্যনির্বাহী পরিষদ। বর্ধিত সেই বৈঠকে সব জেলা সম্পাদককে ডাকা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছিলেন বর্ধন। পরবর্তী স্তরে ৪-৫ সেপ্টেম্বর বসবে রাজ্য পরিষদের বৈঠক। জেলাভিত্তিক প্রাথমিক আলোচনায় সিপিএমের মতো সিপিআই নেতৃত্বও মনে করছেন, ভোটের সময় সন্ত্রাস এবং গণনায় কারচুপি না হলে বামেদের ফল আরও একটু ভাল হত।
সন্ত্রাসের আবহেও নিজেদের ত্রুটি-বিচ্যুতির দিকগুলি বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন সিপিআই নেতৃত্ব। যার প্রেক্ষিতে বৈঠকের শেষে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার মঙ্গলবার বলেছেন, “বামফ্রন্টের ভুলের কথা আমরা বলছি। কিন্তু আমাদের ভুল-ভ্রান্তি কী হয়েছিল, সেগুলো চিহ্নিত করা দরকার। বামফ্রন্ট কী কী কাজ করেছিল আর কী কী করতে পারেনি এবং ভুল করেছিল, স্পষ্ট করেই বলা উচিত। মানুষ যাতে বুঝতে পারে।”
এই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, নিজেদের দুর্বলতা কাটাতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি বাংলায় সংগঠন নতুন করে সাজানোর কথা বলেছে। তাঁরাও কি তা-ই মনে করছেন? বর্ধনের বক্তব্য, “আমি বলছি, শুধু সিপিএম নয়। সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক সামগ্রিক ভাবে বামেদের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে হলে নানা ভাবে তাদের পরিবর্তন আনতে হবে। সংগঠন বা নেতৃত্বে রদবদল তারই একটা অঙ্গ হিসাবে ভাবতে হবে।”
কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে সিপিআই দেখেছে, রাজ্যের মোট ৪৮ হাজার ৮০০ গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২৩ হাজার ৩৯৯। বামেরা জিতেছে ১৫ হাজার ২৩টি এবং কংগ্রেস ৫৪২৯। অন্যান্য দল পেয়েছে ২৫৭৯ আসন। আরও দেড় হাজার আসনের হিসাব নির্বাচন কমিশন সূত্রে এখনও পাওয়া যায়নি। তৃণমূলের প্রাপ্ত আসনের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা। সুতরাং, গভীরে গিয়ে বিচার করলে সার্বিক আসনের হিসাব শাসক দলের পক্ষে খুব একতরফা নয়!
বর্ধনের কথায়, “গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলেরই আধিপত্য আছে। দু’বছর আগে যাঁরা বিপুল ভোট দিয়ে তৃণমূলকে রাজ্যের ক্ষমতায় এনেছিলেন, তাঁরা এখনই উৎখাত করতে চাইবেন এমন আশা আমরা করিনি! কিন্তু সুষ্ঠু ভোট হলে বামেরা আরও একটু ভাল জায়গায় থাকত।”
দু’দিনের বৈঠকে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে: বামফ্রন্ট রাজ্যে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় গ্রামবাংলায় কায়েমি স্বার্থের একটা বড় অংশ বাম শিবিরে এসে ঢুকেছিল। বিশেষত, সিপিএমের অন্দরে তারা বিশেষ আস্থা অর্জন করেছিল। পরিস্থিতি বদলানোর ইঙ্গিত মিলতেই তারা শিবির বদলেছে। তাদের সঙ্গে বাম কর্মী-সমর্থকদের একাংশও বসে গিয়েছে। বামফ্রন্ট এই কৌশল ধরতেই পারেনি।
পাশাপাশিই বলা হয়েছে, ‘৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার সুবাদে রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের মানসিকতা বামফ্রন্ট কর্মীরা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন’। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভুল স্বীকারের কথা বলা হলেও ভুলগুলো কী, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় খুব বেশি কর্মী এই কাজে নামেননি। |
ময়না তদন্তে রাজ্যে আসছেন কারাটরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সদ্যই রাজ্য সিপিএমের জন্য কর্তব্য বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ বার আলিমুদ্দিনের ময়না তদন্তে হাজির হচ্ছেন প্রকাশ কারাটেরা। পঞ্চায়েত ভোটের পর্যালোচনা এবং তার ভিত্তিতে আগামী লোকসভা ভোটের জন্য রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সেপ্টেম্বরের গোড়ায় বৈঠকে বসছে রাজ্য সিপিএম। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য কমিটির বৈঠক। তার পরের দু’দিন, ৭-৮ তারিখ বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকেছে আলিমুদ্দিন। সেখানে থাকার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক কারাট এবং আরও দুই পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি এবং এস আর পিল্লাইয়ের। তার আগে কাল, বৃহস্পতিবারই অবশ্য রাজ্য কমিটির বৈঠক আছে। তার সঙ্গেই যে বর্ধিত রাজ্য কমিটির পরিকল্পনা ছিল, তা পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে হচ্ছে। |
|
|
|
|
|