পাঁচ-পাঁচটা সেঞ্চুরিতে গন্ধমাদন ইনিংস বর্ষার
সেঞ্চুরি করে ফেলল পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া ও কাঁথি; দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও ক্যানিং এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়া। কিন্তু সেঞ্চুরির খুব কাছে এসে ৯০-এর ঘরে আউট কলকাতা!
বৃষ্টির স্কোরবোর্ডে হলদিয়ার নামের পাশে ১৭২ মিলিমিটার। কাঁথি ১০০। ডায়মন্ড হারবার ১৭১। ক্যানিং ১০৮। উলুবেড়িয়া ১৫০। আর কলকাতা ৯২ মিলিমিটার। এই হিসেব সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের দাপটে দক্ষিণবঙ্গে রবিবার রাত থেকে যে-বৃষ্টি হয়েছে, এ-পর্যন্ত অগস্টের গড় বৃষ্টির পরিমাণের থেকে সেটা বেশি। আবহবিদদের কেউ কেউ বলছেন, সাম্প্রতিক কালের বৃষ্টির হিসেবে এটা একটা রেকর্ড। আর এতে উল্লেখযোগ্য অবদান হলদিয়া, কাঁথি, ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং আর উলুবেড়িয়ার। আর খানিকটা কলকাতারও।
রেকর্ড গড়া হয় ভাঙার জন্যই। মঙ্গলবার রাতে নিম্নচাপের অবস্থা ও অবস্থান যা ছিল, তাতে আজ, বুধবার বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর বৃষ্টির সেই রেকর্ড ভাঙার ব্যাটিং করে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। তাঁদের মনে হচ্ছে, কলকাতার কাছেও সেঞ্চুরি করার আর একটা সুযোগ রয়েছে। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মহানগরীতে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এবং শিখর ধবনের ধাঁচে বর্ষার ব্যাটিং-ধামাকা চলছেই।

সমুদ্র উত্তাল। মঙ্গলবার দিঘায় প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “মঙ্গলবার রাতে নিম্নচাপটি বাঁকুড়ার উপরে অবস্থান করছিল। সেটি ঝাড়খণ্ডের দিকে ধীরে ধীরে সরে যাবে। বৃষ্টির দাপট বাড়বে বাংলার পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়।” আজ, বুধবার বিকেলের পরে কলকাতায় বৃষ্টি অনেকটাই ধরে আসবে বলে জানান গোকুলবাবু। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, বৃষ্টির এই কমে আসাটা কিন্তু নিতান্তই সাময়িক। কারণ, পরিমণ্ডলের যা অবস্থা, তাতে বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি এখনই পিছু ছাড়ছে না বাংলার।
দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে প্রবল বৃষ্টি হলেও এখনই রাজ্যে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানান সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষি, ক্ষুদ্র সেচ দফতরের মন্ত্রী-আমলারা এ দিন মহাকরণে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। পরে সেচমন্ত্রী বলেন, “যে-ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আপাতত বন্যার কোনও আশঙ্কা দেখছি না।”
রাজ্যে আমন ধান চাষের ক্ষেত্রে জলের যে-ঘাটতি ছিল, এই বৃষ্টিতে তা প্রায় মিটে গিয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, “এ-পর্যন্ত যে-বৃষ্টি হয়েছে, তাতে একমাত্র বীরভূম জেলা বাদে সারা রাজ্যেই চাষের কাজে জলের ঘাটতি পুষিয়ে গিয়েছে। বীরভূমে এখনও প্রায় ১২ শতাংশ ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। আশা করছি দু’-এক দিনের মধ্যে তা-ও মিটে যাবে।” কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৯০ শতাংশ জমিতে ধান রোয়া শেষ। অতিবৃষ্টিতে শেষ পর্যন্ত বন্যা না-হলে এ বার রাজ্যে আমন ধানের ফলনে রেকর্ড হতে পারে বলে আশা করছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা।এখনই বন্যার আশঙ্কা নেই বলে আশ্বাস দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেচমন্ত্রী জানান, নিম্নচাপের মতিগতির উপরে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। ওই নিম্নচাপ ঝাড়খণ্ডে ঢোকার পরে ওই রাজ্য এবং সংলগ্ন ওড়িশায় বৃষ্টি বাড়বে। তাতে আখেরে বাংলার পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
রাজীববাবু বলেন, “পার্শ্ববর্তী রাজ্যের বিভিন্ন জলাধার থেকে বেশি জল ছাড়া হলে দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলিতে তার প্রভাব পড়বে। পরিস্থিতির উপরে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।”
৫০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তোড়ে বৃষ্টি চলায় রাজ্যের জলাধারগুলিতে জল বাড়ছে। রাজীববাবু জানান, ইতিমধ্যেই গালুডি জলাধার থেকে এক লক্ষ কিউসেক, চাণ্ডিল জলাধার থেকে ৬৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। কংসাবতী প্রকল্প থেকে ১০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.