ভোটের ধাক্কায় গ্রামোন্নয়নের কাজে
পিছিয়ে গেল রাজ্য, অসন্তুষ্ট সুব্রত
কশো দিনের কাজে ফের পিছিয়ে পড়ল এ রাজ্য।
পঞ্চায়েত দফতরের হিসেব অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে পরিবারপিছু ১৫ দিন কাজ দেওয়া গিয়েছে। গত আর্থিক বছরে এই সময়ে যা ছিল গড়ে ৩৫ দিন। এবং শুধু একশো দিনের কাজ নয়, কেন্দ্রের অনুদানে চলা অন্য ১৭টি প্রকল্পেও এ বছরে তেমন অগ্রগতি হয়নি।
মঙ্গলবার গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুধু মহাকরণ থেকে হয় না। এই কাজের সাফল্য নির্ভর করে মূলত জেলা প্রশাসনের তৎপরতার উপরে। বাম জমানায় গ্রামোন্নয়নের কাজে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় তালিকার নীচের দিকে ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত বছর থেকে রাজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সে জন্য কেন্দ্র প্রশংসাও করেছে। কিন্তু এ বার যা পরিস্থিতি, তাতে আবার যদি রাজ্য নেমে যায়, তা হলে সেটা খুবই হতাশাজনক হবে। পঞ্চায়েত দফতরের সচিব সৌরভ দাসও বৈঠকে জানিয়েছেন যে, ১০০ দিনের কাজে মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া এবং দার্জিলিঙের অবস্থা সব চেয়ে খারাপ।
গ্রামোন্নয়নের কাজে পিছিয়ে পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুব্রতবাবু বৈঠকে বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য গত দু’মাস কাজ করা যায়নি। যদিও পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে একশো দিনের কাজে কোনও বাধা ছিল না। বাধা ছিল না আগে অনুমোদিত হয়েছে এমন কোনও প্রকল্পের কাজ করার ক্ষেত্রেও।
তা সত্ত্বেও কাজ হয়নি কারণ, “জেলাশাসক থেকে পঞ্চায়েত কর্মী সকলেই ভোটের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। আর পঞ্চায়েতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না-থাকায় বিডিও-রা কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি” বললেন দফতরের এক কর্তা।
যেখানে দাঁড়িয়ে
১০০ দিনের কাজ
জেলা খরচ(%) পরিবার পিছু কত দিন কাজ
    ২০১২-১৩ ২০১৩-১৪
পুরুলিয়া ৫৪.২৭ ৩৯ ১১
কোচবিহার ৫৭.৫৩ ১৭ ১২
মুর্শিদাবাদ ৫০.৩৮ ২৭ ১৩
উত্তর ২৪ পরগনা ৫৮.০০ ৪৫ ১৯
দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৪০.৬৭ ৪৩ ২১
পূর্ব মেদিনীপুর ৬৪.৪১ ৩৯ ১৯
গ্রামোন্নয়নের কাছে এই ঘাটতি দূর করার জন্য হাতে যথেষ্ট সময় নেই জানিয়ে জেলাশাসকদের মন্ত্রী বলেছেন, গত বারের সাফল্য ধরে রাখাটাই এখন চ্যালেঞ্জ। সে জন্য জেলাশাসকদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, গত বছর একশো দিনের কাজে ২০ কোটি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। এ বার ২৩ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোটাই প্রথম কাজ। জাতীয় স্তরে অবনমনের কথা মাথায় রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন পঞ্চায়েত সচিবও।
পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনা, ইন্দিরা আবাস যোজনা, শৌচাগার নির্মাণ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে এখন প্রায় ৭০০০ কোটি টাকা দফতরের হাতে রয়েছে। বৈঠকে পঞ্চায়েতমন্ত্রীও জানিয়েছেন, এ বার দিল্লি অনেক বেশি টাকা দিয়েছে। কাজ করলেই আরও কেন্দ্রীয় টাকা আসবে। কিন্তু আগামী সাত মাসে বরাদ্দ টাকা খরচ করা কঠিন বলেই মনে করছেন পঞ্চায়েত কর্তারা। যদিও সুব্রতবাবুর মতে, এ বার কাজ করার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। কারণ, গত বার অধিকাংশ জেলা পরিষদ বিরোধীদের দখলে ছিল। এ বার যা শাসক দলের দখলে। ফলে কাজের সুবিধা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.