লক্ষ্যমাত্রার কাছে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল বাঁকুড়া। ক’দিনের টানা বর্ষণে এ বার লক্ষ ভেদ করতে চলল পুরুলিয়াও।
শনিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পুরুলিয়া জেলায় প্রায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এই প্রবল বৃষ্টিই রুখাশুখা এই জেলার চাষিদের স্বস্থি ফিরিয়ে দিয়েছে। কৃষি দফতর জানিয়েছে, পুরুলিয়ায় এ বার আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লক্ষ ৭২ হাজার ১৩২ হেক্টর জমি। কিন্তু অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রোপন করা গিয়েছিল ২ লক্ষ ৩৫ হাজার হেক্টর জমি। পুরুলিয়ার কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা দিব্যন্দু দাস বলেন, “চার দিনে জেলার বিভিন্ন ব্লকে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা উঁচু জমিতে চাষের পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক। আশা করা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার কাছে এ বার ধান রোপন করা যাবে।”.
কৃষি দফতর জানাচ্ছে, সোমবার ও মঙ্গলবার এই জেলায় যথাক্রমে ৩১.৫ ও ৪২.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঝালদা ১ ও ২, পুঞ্চা, জয়পুর, পাড়া এবং পুরুলিয়া ১ ব্লকে সামগ্রিক ভাবে এ বার ধান চাষে কিছুটা ঘাটতি ছিল। সেচের জলের অভার তো ছিলই, সেই সঙ্গে এ বার বৃষ্টির জলও পর্যাপ্ত পাননি চাষিরা। টানা বৃষ্টি সেই ঘাটতির কিছুটা মিটিয়ে দিয়েছে। পুঞ্চা ব্লকের কুঁধুড়কা গ্রামের চাষি শক্তিপদ মণ্ডলের কথায়, “ভাদ্র মাসের শুরুতেই এই বৃষ্টি আমাদের কাছে কার্যত আশীর্বাদ।” জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তার কথায়, “পুরুলিয়ায় উঁচু জমিতে (বাইদে) ধানের চারা চাষিরা রোপন করলেও বৃষ্টির অভাবে মাটিতে ফাটল দেখা গিয়েছিল। তাই জলের অভাবে চারার বৃদ্ধি আশানুরূপ হচ্ছিল না। কিন্তু এই বৃষ্টিতে সেই সমস্যা দূর হয়েছে।”
এই বৃষ্টিতে খুশি বাঁকুড়া জেলার চাষিরাও। বাঁকুড়া জেলা কৃষি উপ-অধিকর্তা অনন্তনারায়ণ হাজরা বলেন, “কিছু এলাকায় বৃষ্টি কম হওয়ায় ধান চারা শুকোচ্ছিল। সেখানে ওই বৃষ্টি বেশ কাজে লেগেছে। সামগ্রিক ভাবে এই বৃষ্টি ধান চাষের খুব উপকার করল। মাচার সবজিরও কাজে লাগবে।” প্রসঙ্গত এই জেলায় এ বার বৃষ্টির পরিমাণ ভাল হওয়ায় ধান চারা রোপনের কাজ অনেকটা এগিয়ে ছিল। কৃষি দফতর জানিয়েছে, বাঁকুড়া জেলায় এ বার ধান চাষের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার হেক্টর জমি। তার মধ্যে রোপন করা গিয়েছে ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে। বাকি জমিতেও বৃষ্টির জলে রোপন সেরে ফেলবেন চাষিরা। সেই আশাতেই বুক বেঁধেছে কৃষি দফতর। |