ক’দিনের টানা বৃষ্টিতে টইটুম্বুর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ১০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু করেছে সেচ দফতর। ইতিমধ্যে বিভিন্ন নদী ও খালের জলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বাঁকুড়া জেলার কিছু রাস্তা। বিশেষত দক্ষিণ বাঁকুড়ায় কয়েকটি রাস্তায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
কংসাবতী সেচ দফতরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র (১) বিশ্বনাথ কুমার মঙ্গলবার বলেন, “গত দু’দিনের বৃষ্টিতে মুকুটমণিপুর জলাধারে জল ফুলে উঠেছে। তাই বাধ্য হয়ে এ দিন দুপুর থেকে ১০ হাজার কিউসেক করে জল কংসাবতীতে ছাড়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছে।” |
কংসাবতী সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর পর্যন্ত জলাধারে জলস্তর ছিল ৪৩৩ ফুট। এই জলাধারের সর্বোচ্চ জল ধারণ ক্ষমতা ৪৪২ ফুট। জলস্তর ৪৩৬ ফুট ছুঁলেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে ধরা হয়। পুরুলিয়া জেলাতেও ভাল বৃষ্টি হওয়ায় এ দিন রাতে জলস্তর আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এতে আতঙ্কের কারণ নেই বলে জানিয়েছে সেচ দফতর। খাতড়ার মহকুমাশাসক শুভেন্দু বসু বলেন, “মুকুটমণিপুর জলাধারের ছাড়া জলে কোনও এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে যে সব এলাকায় নিচু কজওয়ে রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক করার জন্য ওইসব এলাকার বিডিওদের আমরা বলেছি।” |
ভৈরববাঁকির কজওয়েতে স্ত্রোত ঠেলে পারাপার। ছবি: উমাকান্ত ধর। |
লাগামহীন বৃষ্টির জেরে বারিকুল থানার অমৃতপাল গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকি নদীর জল সোমবার রাত থেকে কজওয়ের উপর দিয়ে বইছে। ফলে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কংসাবতী নদীর জল খাতড়ার কেচোন্দাঘাটের কজওয়ে ছাপিয়ে বইছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে খাতড়া-আকখুটা রাস্তা। এই দু’টি মূল রাস্তা বন্ধ থাকায় চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েছেন খাতড়া, রাইপুর, রানিবাঁধ ও বারিকুল থানা এলাকার বাসিন্দারা। বাধ্য হয়ে ঘুরপথে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে খাতড়া, রাইপুর, রানিবাঁধ ও সারেঙ্গা ব্লকে কিছু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। মহকুমাশাসক বলেন, “বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলিকে ত্রিপল দিতে বলা হয়েছে।” |