|
|
|
|
মেদিনীপুর পুরসভা |
ওয়ার্ডের পুনর্বিন্যাসের চূড়ান্ত মানচিত্র গেল নির্বাচন কমিশনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নভেম্বরে ভোট মেদিনীপুর পুরসভায়। তার আগে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত করে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শেষ করতে চায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। দ্রুত সেই কাজ শেষ করতে মঙ্গলবারই ওয়ার্ড বৃদ্ধির চূড়ান্ত মানচিত্র পাঠিয়ে দেওয়া হল নির্বাচন কমিশনে। এখন অপেক্ষা শুধু কমিশনের শিলমোহরের। তারপরই চূড়ান্ত হয়ে যাবে মেদিনীপুর পুরসভার ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস।
কংগ্রেস ও তৃণমূল পরিচালিত মেদিনীপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওই ওয়ার্ড বিভাজনের বিষয়টি সামনে আসে। কিন্তু বিদায়ী পুর কর্তৃপক্ষ ওয়ার্ড বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে প্রশাসনের উপরেই ওই দায়িত্ব এসে পড়ে। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত বলেন, “আমরা ওয়ার্ড বিন্যাসের কাজ শেষ করেছি। এ বার পুরসভায় ২৪ থেকে একটি বাড়িয়ে ২৫টি ওয়ার্ড করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমরা নতুন ওই ওয়ার্ডের মানচিত্র তৈরি করেছি। কমিশন অনুমোদন দিলে তা চূড়ান্ত করা হবে।”
প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড ভেঙে ওই ২৫ নম্বর ওয়ার্ড করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সঙ্গে গোপগড়কেও এ বার পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরসভা এলাকায়। উদয়পল্লি, টাউন কলোনি, নেপালি পাড়া, অশোকনগর, কটনমিল, বিষ্ণুনগর, দাসপাড়া, কবরডাঙা বস্তি, তাঁতিগেড়িয়া, বিড়লা মিল ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ছিল ২১ নম্বর ওয়ার্ড। এ বার সেই ওই ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কবরডাঙা বস্তি, তাঁতিগেড়িয়া, বিড়লা মিল, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, দাসপাড়া ও বিষ্ণুনগর। ওই এলাকাগুলি ঢুকে যাচ্ছে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে। বাকি এলাকা নিয়ে থাকছে ২১ নম্বর ওয়ার্ড। আর ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ঢুকে গিয়েছে গোপগড়।
তার সঙ্গে থাকছে পুরনো এলাকা রাঙামাটি, স্পিনিং মিল, জলট্যাঙ্কের কাছে থাকা সরকারি আবাসন, হামাল পাড়া, পাকিজা বস্তি, ভগবতীপল্লি, এফসিআই গুদাম। প্রস্তাবিত নতুন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকছে প্যারামেডিক্যাল কলেজ, নরমপুর, আইটিআই ও রাঙামাটি। এ ভাবেই কোনও ওয়ার্ড থেকে কিছুটা নিয়ে, কোনও ওয়ার্ডে নতুন এলাকা ঢুকিয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
পুর-নির্বাচনের আগেই ওয়ার্ড সম্প্রসারণের কাজটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, তা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ভোটার তালিকা তৈরি সম্ভব নয়। আর তা না হলে নির্বাচন হবে না। আদালত পুরসভা নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই দিনক্ষণ ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ আদালত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেদিনীপুর পুরসভার নির্বাচন সম্ভব কিনা। কারণ, সবে ওয়ার্ড বৃদ্ধির ম্যাপ তৈরি করে তা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন তা অনুমোদন করলে তবেই গ্রাহ্য হবে। তারপর আলাদা করে ওই তিনটি ওয়ার্ডের ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। জেলার এক পদস্থ কর্তার কথায়, আদালতের নির্দিষ্ট দিন অনুযায়ী যদি ভোটার তালিকা তৈরি না করা যায়, সে ক্ষেত্রে আরও কিছু দিন সময় চেয়ে আবেদন জানানো হবে। তারপরই নির্বাচন করা হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ না করা গেলেও চলতি বছরেই তা করা সম্ভব হবে।
অন্য দিকে, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে পুরবাসীও। কারণ, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দিন হতে চলল পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। পুরপ্রধান, উপপ্রধান বা কাউন্সিলর এখন কেউই কোনও কাজ করতে পারছেন না। স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র থেকে শুরু করে উন্নয়ন সব কিছুতেই বাড়ছে জটিলতা। বিশেষত, নিকাশি নালার বেহাল দশার জন্য বর্ষায় শহরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়, তখন কাকে বলবেন সাধারণ মানুষ।
স্ট্রিট লাইট খারাপ হলে বা টানা আবর্জনা পরিস্কার না হলেই বা কার কাছে যাবেন। ২৪ জন প্রতিনিধি নিয়েও যেখানে পুর নাগরিকরা উপযুক্ত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন, সেখানে একজন মহকুমাশাসক দায়িত্ব নিয়ে কতটা পুর পরিষেবা দিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। তাই উন্নয়নের প্রশ্নে দ্রুত নির্বাচন করানোর দাবি রয়েছে সাধারণ মানুষেরও। |
|
|
|
|
|