বড় মেয়েকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছটফট করতে দেখে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন বাবা-মা দু’জনেই। বাঁচলেন না কেউই। বিদ্যুতের ছোবল কাড়ল তিনটি প্রাণ।
মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে হুগলির হিন্দমোটরের ব্যাঙ্কপার্ক এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন অমলেশ সাহা (৫০), তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবী (৪৮) এবং মেয়ে অঙ্কিতা (১৩)। তাঁরা থাকতেন একটি বহুতলে। অমলেশবাবু এক রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। অঙ্কিতা মাখলা দেবীশ্বরী বিদ্যানিকেতনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। বেসরকারি টিভি চ্যানেলে নাচের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুবাদে অঙ্কিতা এলাকায় জনপ্রিয় ছিল। তার ছোট বোন এখন জেঠুর কাছে রয়েছে।
এ দিন টানা বৃষ্টিতে ওই আবাসন লাগোয়া এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল ঢোকে আবাসনের নীচেও। পুলিশ জানায়, এক তলায় বিদ্যুতের মিটার বক্স থেকে আবাসনের কোলাপ্সিবল গেট সংলগ্ন জলমগ্ন জায়গাটি বিদ্যুৎবাহী হয়ে পড়ে। পরীক্ষা দিয়ে দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ অঙ্কিতা বাড়ি ফেরে। গেটে হাত দিতেই সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
মেয়ের চিৎকার শুনে অমলেশবাবু ও কৃষ্ণাদেবী নীচে নেমে আসেন। মেয়েকে ছাড়াতে তার গায়ে হাত দিতেই তাঁরাও তড়িদাহত হন। পুলিশ সিইএসসি-কে খবর দেয়। সিইএসসি আবাসনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর পরে সাহা দম্পতি এবং অঙ্কিতাকে উত্তরপাড়ার নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে দেহগুলির ময়না-তদন্ত হয়। অমলেশবাবুর দাদা রাধাগোবিন্দ সাহা বলেন, “পরীক্ষা থাকায় ভাইঝি স্কুল থেকে তাড়াতাড়ি ফিরেছিল। তার পরেই ওই ঘটনা। ভাইঝি পড়াশোনায় ভাল ছিল। সব শেষ হয়ে গেল!” |