|
|
|
|
অসামরিক বিমান পরিবহণে স্বশাসিত সংস্থা গড়তে বিল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আমেরিকার ধাঁচে ভারতেও অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণের ভার একটি স্বশাসিত সংস্থার হাতে তুলে দিতে চায় কেন্দ্র। মঙ্গলবার এই মর্মে লোকসভায় একটি বিল পেশ করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী কে সি বেণুগোপাল। দেশে বিমান পরিবহণের বর্তমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন’ বা ‘ডিজিসিএ’ ভেঙে ফেলে নতুন সংস্থা সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) তৈরি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই বিলে। বলা হয়েছে, বর্তমান ডিজিসিএ-র চেয়েও বেশি আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকবে নতুন সংস্থাটির হাতে। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে এখনও বেশ কয়েক মাস লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
ঠিক কী ধরনের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকবে প্রস্তাবিত সিএএ-র?
বিলটি বলছে, আকাশে যাত্রীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি টিকিটের দামের মতো যাত্রী-স্বার্থের অন্য ক্ষেত্রগুলিও যাতে সুরক্ষিত থাকে, তা দেখবে স্বশাসিত এই সংস্থা। বর্তমানে যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে বিমান ওঠানামা করার সময়ে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি ঠিক থাকছে কি না, তা দেখে ডিজিসিএ। কিন্তু বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলি লাগামছাড়া ভাবে টিকিটের দাম বাড়ালে তাদের উপরে ডিজিসিএ-র নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কেন্দ্র চাইছে, নতুন স্বশাসিত সংস্থাটি টিকিটের দামের উপরেও নজরদারি করুক।
এর পাশাপাশি, নতুন সংস্থাটি বিভিন্ন খাতে পাওয়া টাকা ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবে। কোনও বিমানকে ওড়ার ছাড়পত্র দেওয়া কিংবা পাইলটদের প্রশিক্ষণের মতো বেশ কিছু খাতে এখন ডিজিসিএ টাকা পায়। কিন্তু সেই টাকা খরচের স্বাধীনতা তাদের নেই। সংস্থার এক কর্তার কথায়, “ছোটখাটো খরচের জন্য এতদিন আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। এই বিল পাশ হয়ে গেলে আমাদের হাতেই আর্থিক ক্ষমতা চলে আসবে।” ডিজিসিএ-র কর্মীরা এখন সরাসরি বিমান মন্ত্রকের অধীনে কাজ করেন। স্বশাসিত হলে সংস্থাটি ইচ্ছেমতো কর্মী নিয়োগ করতে পারবে। প্রসঙ্গত, এখন ডিজিসিএ-তে প্রায় ৪০ শতাংশ পদ খালি পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রের নিয়ম মেনে সেখানে কর্মী নিয়োগ করতে গিয়ে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে।
বছরখানেক আগে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইকাও)-এর কর্তারা ভারতে এসে ডিজিসিএ-এর পরিকাঠামো দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে আইকাও-এর নিয়ম মেনে চলতে হয় সমস্ত দেশকে। আইকাও-এর সেই ভারত সফরের সময়ে আমেরিকার বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর কর্তারাও এসেছিলেন। মূলত তাঁদের পরামর্শেই ডিজিসিএ-এর খোলনলচে বদলে ফেলা হচ্ছে বলে এ দিন লোকসভায় পেশ করা এই বিলে বলা হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার এই বিল পেশের সময়ে আপত্তি করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, “সরাসরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে আরও সুবিধে হয়ে যাবে বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলির। বিল পেশের সময়ে বলা হল, আমেরিকা নাকি এই রকম চাইছে। আমেরিকা চাইলে আমাদের মেনে নিতে হবে কেন?” |
|
|
|
|
|