পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু গত দু-দিনের সামান্য বৃষ্টিতেই সিউড়ি পুরসভার নাগরিক পরিষেবার দুর্দশা সামনে এসেছে। যেখানে সেখানে যত্র তত্র জমে রয়েছে জল। খানাখন্দে ভরা রাস্তা জলে-কাদায় মাখামাখি। ফলে পথ চলতি মানুষদের ভোগান্তি চরম। মোটরবাইক-সহ নানা যানবাহনের চাকার ছেটানো নোংরা জলে পথ চলতি মানুষদের জামাকাপড় ভিজে যাছে। একই অবস্থা রামপুরহাট-সহ জেলার নানা জায়গায়।
|
বেহাল নিকাশির জন্য অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায়
সিউড়ি সদর হাসপাতালের সামনে। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হলেও, গত দু-দিন ধরে আকাশ মেঘলা হয়ে রয়েছে। হঠাত্ এই মেঘলা পরিবেশে শান্তিনিকেতনে দলে দলে আসছেন পর্যটকেরা। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন তো বটেই। বাদ যাচ্ছে না পর্যটকদের আর এক প্রিয় জায়গা খোয়াই তথা সোনাঝুরির জঙ্গলও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পর্যটক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শঙ্কর হালদার পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে গত সোমবার শান্তিনিকেতনে এসেছেন। তিনি বললেন, “প্রতিবছরই বর্ষায় এক বার শান্তিনিকেতন আসি। খুব ভাল লাগে। এ বারও তাই সপরিবারে এসেছি। বুধবারই ফিরে যাব।” তেমনি দল বেঁধে বন্ধুদের সঙ্গে বর্ষা উপভোগ করতে শান্তিনিকেতনে এসেছেন তথ্য প্রযুক্তি দফতরের কর্মী যুবতী সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “কম খরচে দু-এক দিন ছুটি কাটানোর জায়গা তো হাতের নাগালে শান্তিনিকেতন। তার ওপর এই মেঘলা আবহাওয়া। উপরি পাওনা ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি।” তবে জেলায় প্রয়োজনের তুলনায় এ বার বৃষ্টি বেশ কম হয়েছে। তবুও জেলা কৃষি দফতর এবং চাষিরা সামান্য স্বস্তিতে রয়েছেন। জেলা কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক অমর মণ্ডল জানিয়েছেন, গত জুন মাস থেকে এই মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৫৩৮ মিলিলিটার। যেখানে হওয়ার কথা ছিল ৭৪৯ মিলিলিটার। এখনও ২১১ মিলিলিটার বৃষ্টি ঘাটতি রয়েছে। তবে নানুর ও লাভপুর ব্লকে ৯০ শতাংশ খরিফ চাষ হয়েছে। ওই এলাকা দু’টিতে বেশ কিছু গভীর নলকূপ রয়েছে। জেলায় গড় ৭৬.৪১ শতাংশ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সিউড়ি-১, খয়রাশোল, দুবরাজপুর, মহম্মদবাজার, রাজনগর ও রামপুরহাট-১ ব্লকে গড়ে মাত্র ৫০ শতাংশ চাষ হয়েছে। এখনও টানা এক সপ্তাহ এইরকম ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হলে আরও কিছুটা চাষ হবে এবং রোপণ করা ধানচারাগুলি ঠিক ঠাক থাকবে বলে আশা অমরবাবুর। গত দু’দিনের বৃষ্টিই শুধু নয়, মাঝে মধ্যে হঠাত্ হঠাত্ এক আধ পশলা বৃষ্টি হওয়ার ফলে অসেচ এলাকায় কিছুটা হলেও খরিফ চাষ হয়েছে।
রামপুরহাট ১ ব্লকের বেলে গ্রামের চাষি হরেকৃষ্ণ মণ্ডল ও নলহাটি ১ ব্লকের সঙ্কেতপুর গ্রামের চাষি জয়দেব মণ্ডল প্রায় একই সুরে বলেলেন, “গত বছর তো কোনও চাষই করতে পারিনি। এ বার তবু বেশ কিছুটা চাষ হয়েছে। এরকম বৃষ্টি আরও কিছুদিন চললে ভাল হয়। তবে আশ্বিন মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ধানের ফলন হবে না।” |