চেষ্টা করেও ঘরের বাইরে বেরোতে পারেননি দু’বছর। অবশেষে সৌদি আরবের রাজা আব্দুল্লার হস্তক্ষেপে ক্রেনে করে বাইরে বেরিয়ে এলেন ৬১০ কিলোগ্রাম ওজনের খালেদ মহসিন শাইরি। সেই ছবি তুলতেই সৌদির জিজানে ভিড় জমিয়েছিলেন চিত্রসাংবাদিকের দল।
সোমবার সকাল থেকে খালেদের বাড়ির ছবিটা ছিল অন্য রকম। তার খাটটা আটকানো ক্রেনের সঙ্গে। আস্তে আস্তে তিন তলা থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে খাটটাকে। খাটের নীচে লাগানো আছে চাকা। যাতে নামানোর পর সহজেই খালেদকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দেওয়া যেতে পারে। সেই খাটেই বসে আছেন সাতাশ বছরের খালেদ।
অতিরিক্ত ওজনের কারণেই বাইরের জগৎটাও দেখা হয়নি তাঁর অনেক দিন। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে হাসপাতালেও যেতে পারতেন না খালেদ। তাই চিকিৎসাও করা যায়নি বহুদিন। সৌদি আরবের রাজা আব্দুল্লা খালেদের খবর পেয়েই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশেই নড়েচড়ে বসে সৌদি প্রশাসন। সোমবার ক্রেনে করে খালেদকে নামানোর সময় কড়া পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সঙ্গে রাখা হয়েছিল রেডক্রসের আপদকালীন ব্যবস্থাও। |
রিয়াধের হাসপাতালে খালেদ। ছবি: এএফপি। |
খালেদকে বাইরে আনার জন্য কম কষ্ট করতে হয়নি উদ্ধারকারী দলকেও। ব্রিটেন থেকে বিশেষ প্রযুক্তির খাট আনা হয়েছিল। কিন্তু পেল্লায় সেই খাট ঢোকানো হবে কী করে? তাই শেষে খালেদের বাড়ির দেওয়াল ভেঙে ফেলতে হয়। তার পরই বাইরে বেরিয়ে আসেন খালেদ।
বাড়ি থেকে বের করার পর খালেদকে স্থানীয় বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল সৌদি সেনার জেট বিমান। সেই বিমানেই চিকিৎসার জন্য রিয়াধে নিয়ে আসা হয় খালেদকে। তবে ঠিক কী ধরনের চিকিৎসা হবে খালেদের, সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছে।
খালেদের ভাই নাসের মাকীন অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “ছোটবেলা থেকেই খুব অসুস্থ খালেদ। বেশ কয়েকটা বড় অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে। ইদানীং অবস্থা বেশি খারাপ হচ্ছিল। ওজনটাও বাড়ছিল দিন-দিন। এখন রাজার হস্তক্ষেপে সরকারের সাহায্য পাওয়ায় আমরা খুশি।” |