মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা অপূর্ব চৌধুরীকে গুলি করার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
কয়েক দিন আগেই অপূর্ববাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কাশেম কাজি খুন হওয়ায় এই হামলার পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া দেখছিলেন আত্মীয়-বন্ধু অনেকেই। কিন্তু পুলিশ যাঁদের ধরেছে, তাঁদের এক জন এলাকায় সিপিএম কর্মী বলে পরিচিত। আরও পাঁচ জনকে পুলিশ খুঁজছে।
সোমবার রাতেই অপূর্ববাবুকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে বর্ধমানের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে অস্ত্রোপচার করে তাঁর কানের লতির খানিকটা বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি আপাতত অনেকটা ভাল আছেন।
মঙ্গলবার বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “যে পাইপগান থেকে গুলি করা হয়েছিল, সেটি বুলেটশূন্য অবস্থায় ঘটনাস্থলে পাওয়া গিয়েছে। বুলেটটিও মিলেছে ঘটনাস্থলেই। ধৃত তিন জনকে বুধবার আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।” পেশায় মৎস্য ব্যবসায়ী অপূর্ববাবুর উপরে হামলার প্রতিবাদে এ দিন কৈচর বাজারে ব্যবসায়ীরা ১২ ঘণ্টা বন্ধ পালন করেছেন। |
মোটরবাইকের পিছনে বসে কৈচরের দলীয় কার্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ববাবু। উল্টো দিক থেকে আসা একটি বাইকে তিন আরোহী তাঁদের পেরিয়ে যাওয়ার সময়ে গুলি ছোড়ে। তা অপূর্ববাবুর কানের লতি ছুঁয়ে যায়।
ওই রাতেই অপূর্ববাবু আট জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তবে রাজনৈতিক কারণেই এই হামলা, এমন অভিযোগ তিনি করেননি। এ দিন পুলিশ নয়ন রায়, চিরঞ্জিত দিগর ও তৈয়ব আলি শেখ নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। প্রথম দু’জনের বাড়ি স্থানীয় নতুনগ্রামে, তৃতীয় জনের কুরুম্বা গ্রামে। অপূর্ববাবুর অভিযোগ, তৈয়ব বাইক চালাচ্ছিলেন, পিছনে বসে ছিলেন বাকি দু’জন। আরও পাঁচ জন সেচখালের ধারে ঝোপে-ঝাড়ে লুকিয়ে ছিল।
পুলিশ জানায়, এখনও ফেরার থাকা ওই পাঁচ জনের মধ্যে এক জনের বাড়ি কুরুম্বায়, বাকি চার জন লক্ষ্মীপুর ও পিন্ডিরা গ্রামের বাসিন্দা। এদের সকলের রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্ট নয়। তবে নয়ন রায় এলাকায় সিপিএম কর্মী বলেই পরিচিত। কৈচরে দলের ভাগীরথী-অজয় জোনাল অফিসেই তিনি বেশির ভাগ সময়ে থাকতেন। তৃণমূল নেতা মুকুল রায় এবং অনুব্রত মণ্ডলও প্রথম থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ তুলছিলেন। তবে সিপিএমের জোনাল সম্পাদক দুর্যোধন সরের দাবি, “ওদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ঢাকতেই আমাদের লোকদের মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হচ্ছে।”
|