অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ নেতাকে গুলি মঙ্গলকোটে
ঙ্গলকোটের অনুব্রত মণ্ডল-বিরোধী নেতা কাশেম কাজি খুনের পরে তিন দিনও পেরোল না। রাতের রাস্তায় অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাকে গুলি করে গেল আততায়ীরা। সোমবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ একটি মোটরবাইকের পিছনে বসে কৈচরের দলীয় দফতর থেকে শীতলগ্রামে বাড়ির দিকে ফিরছিলেন তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী। উল্টো দিক ছুটে আসা একটি বাইক থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরে রাতে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। গোষ্ঠী রাজনীতিতে মঙ্গলকোটের দলীয় পর্যবেক্ষক তথা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অপূর্ববাবু। গত বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমানের মঙ্গলকোট কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে মাত্র ১২৪ ভোটে সিপিএমের কাছে হেরেছিলেন তিনি। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরই নেতৃত্বে মঙ্গলকোটে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩টি দখল করেছে তৃণমূল।
সোমবার মঙ্গলকোটে গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল নেতা অপূর্ব চৌধুরী।
আনা হয় কাটোয়া হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের দাবি, “পঞ্চায়েত ভোটের পরে বর্ধমান-সহ গোটা রাজ্যেই সিপিএম মাটি ফিরে পাওয়ার জন্য গুন্ডামি শুরু করেছে। সেই জন্যই ওরা অপূর্ব চৌধুরীকে গুলি করেছে।” অনুব্রতও দাবি করেন, “এখন খুন করলে আমাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই সিপিএম এই ঘটনা ঘটিয়েছে।” সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার পাল্টা বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই একের পর এক ঘটনা ঘটছে। এর আগে ভাতারে তৃণমূল নেতা খুনের সঙ্গে এ দিনের ঘটনার কোনও যোগ আছে কি না, পুলিশ তা খুঁজে দেখুক।”
গত শুক্রবার ভাতারের রাস্তায় কাশেম কাজিকে গুলি করে মেরেছিল বাইকে আসা তিন আততায়ী। তাঁর পরিজনেরা অনুব্রত-অনুগামীদের দায়ী করলেও এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগে কারও নাম দেওয়া হয়নি। তবে কাশেমের গোষ্ঠীর লোকজনই হামলা চালিয়েছে কি না, পুলিশ সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। কৈচরের বাসিন্দা, অপূর্ববাবুর ভগ্নিপতি উজ্জ্বল হাজরাও বলেন, “কাশেম কাজি খুনের পরেই আমাদের আশঙ্কা ছিল, অপূর্বর উপরে হামলা হতে পারে। আজ সকালেও ওকে বলেছিলাম দেহরক্ষীর ব্যবস্থা করতে। পাত্তা দেয়নি।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় প্রতি দিনই রিপন সামন্ত নামে এক তৃণমূল কর্মীর মোটরবাইকে বাড়ি ফেরেন অপূর্ববাবু। এ দিনও তিনিই বাইক চালাচ্ছিলেন। অপূর্ববাবু বসে ছিলেন পিছনে। কাটোয়া হাসপাতালে দাঁড়িয়ে রিপন বলেন, “কৈচরের ক্যানাল পাড় ধরে শীতলগ্রামের দিকে যাচ্ছিলাম। কাটোয়া-বলগনা ন্যারোগেজ লাইন পেরোতেই দেখি, উল্টো দিক থেকে একটি মোটরবাইক ‘ডিপার’ দিতে-দিতে তীব্রগতিতে ছুটে আসছে। চোখে আলো পড়ায় আমি গতি কমাই। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই বাইক থেকেই কেউ অপূর্বদাকে গুলি করে।”
ভারসাম্য হারিয়ে বাইক নিয়ে ছিটকে পড়েন দু’জনেই। রিপন উঠে দেখেন, অপূর্ববাবুর কান থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। আতঙ্কে চোখ-মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। নিজেকে সামলে রিপন মোবাইল থেকে কৈচরে দলীয় দফতরে ফোন করেন। দলের লোকজনই গাড়ি ডেকে এনে অপূর্ববাবুকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। এর আগে বীরভূমের খয়রাশোলে একই ভাবে বাইকে যাওয়ার সময়ে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষকে গুলি করে মেরেছিল বাইকে আসা আততায়ীরা। কাশেম কাজির ক্ষেত্রেও তা-ই। ফারাকের মধ্যে, ওই দুই ক্ষেত্রে অনুব্রত-অনুগামীরাই ছিলেন কাঠগড়ায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, উল্টো দিক থেকে আসা বাইকটির চালকের গায়ে ছিল বর্ষাতি, মাথায় হেলমেট। পিছনে দু’জন ছিল। তাদেরই এক জন গুলি চালিয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত কাউকে ধরা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.