কোর্টেই বধূকে ছুরির কোপ অভিযুক্ত স্বামীর
স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন এক তরুণী। সেই ‘অপরাধে’ আদালত চত্বরেই ছুরি হাতে তাড়া করে তাঁকে কোপানোর অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সাত জনের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ইয়াসমিন বেগম নামে ওই তরুণী। শুধু তিনি নন, ছুরির কোপে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তাঁর চার ভাই। সোমবার বিকেলে বর্ধমান আদালত চত্বরে এই ঘটনার পরে বিনা বাধায় পালায় হামলাকারীরা। রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
বর্ধমান আদালত চত্বরে পড়ে রয়েছেন জখম ইয়াসমিন বেগম এবং তাঁর ভাই। ছবি: উদিত সিংহ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বছর চারেক আগে ভাতারের বেলেন্ডা গ্রামের ইয়াসমিনের বিয়ে হয় গ্রামেরই যুবক শেখ লোকমানের সঙ্গে। তাঁদের আড়াই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে টাকা চেয়ে ইয়াসমিনের উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাই বছরখানেক আগে তিনি বাপেরবাড়ি চলে যান। ভাতার থানায় স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগও করেন। মাস দুয়েক আগে লোকমান আদালতে অভিযোগ করেন, রাস্তায় তাঁকে লাঠি, রড দিয়ে মারধর করেছেন ইয়াসমিন ও তাঁর বাপেরবাড়ির ১১ জন। সেই মামলায় জামিন নিতেই এ দিন আদালতে যান ইয়াসমিন ও তাঁর চার ভাই।
জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরে বিকেল ৪টে নাগাদ জজ কোর্টের বারান্দায় বসেছিলেন ইয়াসমিনেরা। তাঁদের অভিযোগ, হঠাৎ সেখানে হাজির হন শেখ লোকমান, তাঁর বাবা শেখ সিরাজুল এবং আরও পাঁচ জন। ইয়াসমিনের কথায়, “ওরা আমাদের তাড়া করে আদালত চত্বরেই ধরে ফেলে। তার পরে এলোপাথাড়ি ছুরি চালিয়ে পালিয়ে যায়।”
সেই সময়ে আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন বেশ কিছু লোকজন। ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়ায় দুষ্কৃতীদের পালাতে দেখেও বাধা দেওয়ার সাহস পাননি কেউই। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ইয়াসমিন এবং তাঁর চার ভাই শেখ আলি নওয়াজ, শেখ হালিম, শেখ আজাহার ও শেখ রুহুলকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইয়াসমিনের পেটে ও গলায় ক্ষত রয়েছে। বাকিদের হাতে, পেটে ছুরির কোপ রয়েছে। বর্ধমান আদালতের আইনজীবী আজিজুল হক মণ্ডল বলেন, “কোর্ট চত্বরে এমন ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত।” ইয়াসমিনের ভাই শেখ হালিমের দাবি, “বধূ নির্যাতনের মামলা করার প্রতিশোধ নিতেই এ ভাবে আমাদের কোপাল ওরা।”
প্রকাশ্যে এমন কাণ্ড করে হামলাকারীরা পালিয়ে গেল কী করে, সে প্রশ্নে বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “জেলা জজ আদালতে ঢোকার মুখেই ইয়াসমিনদের উপরে হামলা হয়। সেই সময়ে প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা ফাঁকা ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ যতক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তার আগেই হামলাকারীরা পালিয়েছে।” আইসি জানান, ইয়াসমিনের স্বামী, শ্বশুর-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.