পাট শোলার বেড়া দেওয়া ছোট চারটি ঘর। তার কোনওটা ভেঙে পড়েছে। কোনটার বেড়ার অর্ধেক খসে পড়েছে। তা দিয়ে ঢুকছে কুকুর, শেয়াল। ওই ঘরেই ক্লাস করছে পিঙ্কি, জ্যোৎস্নারা। এটাই পুষনাডাঙা-হাওয়ারগাড়ি ফাকরুল উলুম মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্র। গত আট মাস ধরে মাদ্রাসার কোনও শিক্ষক সাম্মানিক পাচ্ছেন না। শুধু এই মাদ্রাসাই নয়, কোচবিহার জেলার ২৭টি মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের একই হাল বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “মাদ্রাসাগুলিতে একবার টাকা দেওয়ার পর সেখান থেকে তা ব্যবহারের সার্টিফিকেট দিতে হয়। তা হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী স্তরের টাকা দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সময়ে টাকা পাওয়ার কথা। বিষয়টি দেখা হবে।” পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির কোচবিহার জেলা সম্পাদক মাইনুল আমিন চৌধুরী বলেন, “শেষবার গত ডিসেম্বরের বেতন পেয়েছি মার্চ মাসে। তারপর থেকে কোনও সাম্মানিক আমরা হাতে পাইনি। কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে কোচবিহার জেলায় ২৭ টি মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রকে সরকারি ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সে সময় থেকে মাদ্রাসাগুলিতে মাসে শিক্ষকদের ৮১০০ টাকা এবং শিক্ষাকর্মীদের ৫১০০ টাকা করে দেওয়া হয়। শুরু থেকেই টাকা অনিয়মিত ভাবে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এবারে আট মাস ধরে সাম্মানিক পাচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। পুষনাডাঙা-হাওয়ারগাড়ি ফাকরুল উলুম মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি হাকিমুদ্দিন মিঁয়া বলেন, “আমরা পুরোপুরি সাম্মানিকের উপর নির্ভরশীল। কতদিন আর চালাতে পারব জানি না।”
ওই স্কুলের ছাত্রী পিঙ্কি খাতুন, জ্যোৎস্না খাতুন বলে, “বৃষ্টি হলে ক্লাস করতে পারি না। অন্য সময় কুকুর, শেয়ালের গন্ধ থাকে। খুব অসুবিধে হয়।” স্কুলের শিক্ষক রাজকুমার দে বলেন, “মিডমিলের রান্না ঘরও বেহাল।” স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সাংসদ কোটার ৪ লক্ষ টাকায় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ক্লাস ঘর ও মিডমিলের রান্নাঘর হবে। |