ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশে স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে ঋণ পেলেন ৪ জন বেকার যুবক। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের সমবায় কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাঙ্কের ঘটনা। বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা ঋণগ্রহীতা গৌতম সাহা, প্রণব সরকার, বিমল সরকার এবং সুদর্শন মণ্ডল গত দু’বছর ধরে ব্যাঙ্ক কর্তাদের দফতরে ঘুরে প্রাপ্য ঋণ না পেয়ে গত ২০১১ সালের ৬ জুন বালুরঘাটে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। ক্রেতা আদালতের বিচারক নীরেন্দ্রকুমার সরকার মামলার রায়ে (চলতি বছরের ৫ মে) আগামী ৩০ অগস্টের মধ্যে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ওই যুবকদের ঋণ প্রদানের নির্দেশ দেন। তড়িঘড়ি তাঁদের প্রাপ্য ঋণ দেওয়া হয়। বালুরঘাটের সমবায় ব্যাঙ্ক-এর ম্যানেজার শ্যামলেন্দু দেব বলেন, “ব্যাঙ্কে এমবার্গো জারি হওয়ায় সমস্ত ঋণ বিলি কর্মসূচী বন্ধ হয়ে পড়ায় সমস্যা হয়। তবে আদালতের নির্দেশে আমরা ওই ৪ জন উপভোক্তার মধ্যে ঋণের সম্পূর্ণ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।” আদালত সূত্রের খবর, বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থানন প্রকল্পে (বিএসকেপি) দু’বছর আগে ওই ব্লক থেকে এলাকার ২৫ জন বেকার যুবক যুবতীর জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছিল ব্লকের স্বনির্ভর কর্মসংস্থান দফতর। কিন্তু দু’বছর ধরে ব্যাঙ্কে ঘুরেও ঋণ না পেয়ে ৪ জন উপভোক্তা গত ২০১১ সালের ২৭ জুলাই বালুরঘাটে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সভাপতি নীরেন্দ্র কুমার সরকার গত বছরের ৩০ অগস্ট রায় দিয়ে এক মাসের মধ্যে উপভোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিলির নির্দেশ দেন। অভিযোগ, সেসময় ‘এমবার্গো’র কারণে ওই ঋণ বিলি সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করে ব্যাঙ্ক থেকে আদালতে জানানো হয়েছিল। ওই চার ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। চলতি বছরের ৫ মে রায় দিয়ে চলতি ৩০ অগস্টের মধ্যে ঋণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন গ্রেফতারি প্ররোয়ানা জারি করে জেল ও জরিমানার শাস্তি দেওয়া হবে না তাও জানতে চান বিচারক। আদালতের এই কড়া নির্দেশ পেতেই ওই ৪ জন উপভোক্তাকে ঋণের প্রথম কিস্তির টাকা বিলি করা হয়েছে বলে ব্যাঙ্কের তরফে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতকে জানানো হয়। ওই চারজনের প্রত্যেকের নামে ৪ লক্ষ টাকা করে বিএসকেপি ঋণ মঞ্জুর করে ওই ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছিল। সরকারি ভর্তুকি ২০ শতাংশ। সেই হিসাবে প্রত্যেক ঋণগ্রহীতা যুবকদের ৮০ হাজার টাকা করে ভর্তুকি এবং বাকি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ হিসাবে প্রাপ্য।
অভিযোগ, ব্যাঙ্ক নিজস্ব ঋণের টাকা তো দেয়নি, উল্টে ভর্তুকির কয়েক লক্ষ টাকা দীর্ঘ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ওই নির্দেশে বংশীহারি ব্লকের বিএসকেপি কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত অন্য উপভোক্তারা আশার আলো দেখছেন। তারাও ক্রেতা সুরক্ষার দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “প্রতি মাসে জেলা ক্রেডিট কমিটির সভায় উপভোক্তাদের ঋণ বিলি নিয়ে ব্যাঙ্কের অনীহার অভিযোগ শুনেছি। ব্যাঙ্কগুলির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।”
|