ব্যবসায়ী, বাস মালিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের টানা আন্দোলনের চাপে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা মেরামতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এ দিন সড়ক সারানোর দাবিতে বেসরকারি পরিবহণ শ্রমিকরা সোমবার সকাল ৮টা থেকে টানা ৫ ঘণ্টা ধরে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন। বাম-ডান সব শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা অবরোধে সামিল হন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা কয়েক দফায় আশ্বাস দিলেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও আশ্বাস না পেয়ে অবরোধ চালিয়ে যান পরিবহণ কর্মীরা। শেষে দুপুর ২টো নাগাদ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকার এবং কার্যনির্বাহী সভাপতি কৌশিক দে মোবাইলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের দাবি, ৩০ অগস্টের মধ্যে মেরামতির কাজ শুরুর আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপরেই আবরোধ তুলে নেন পরিবহণ কর্মীরা।
|
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লা বলেন, “জমি অধিগ্রহণের সমস্যা আপাতত মিটলেও চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্থায়ী ভাবে জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য ১৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। ৩০ অগস্টের মধ্যে জাতীয় সড়ক মেরামতি শুরু হবে।” জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “মঙ্গলবার কলকাতায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বৈঠক হবে। সেই বৈঠকেও সড়ক মেরামতি যাতে দ্রুত শুরু হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।” তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি অরিন্দমবাবু বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ চলতি মাসের মধ্যেই সড়ক মেরামতি শুরুর আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।” অবরোধ উঠলেও, জাতীয় সড়কের দশায় কংগ্রেস-তৃণমূল চাপানউতোর শুরু হয়েছে রায়গঞ্জে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েও দীপাদেবী (দাশমুন্সি) জাতীয় সড়ক মেরামতি নিয়ে কোনও ভাবে উদ্যোগী হননি। আগামী একমাসের মধ্যে সড়ক মেরামতির কাজ শেষ না হলে আমরণ অনশন শুরু করা হবে।”
অন্য দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপাদেবীর দাবি, “রাজ্য সরকারের ভুল জমি অধিগ্রহণ নীতির ফলেই জেলায় চার লেনের সড়ক তৈরির কাজ ধীরগতিতে চলছে। কয়েকমাস ধরে জাতীয় সড়ক মেরামতি হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই সংসদে জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবি তুলে সরব হই। তৃণমূল রাজনীতি করছে।”
বর্তমানে ইটাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত জাতীয় সড়কে নানা মাপের খন্দ তৈরি হয়ে গিয়েছে। সড়ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাস মতো কাজ শুরু না হলে টানা ধর্মঘট করা হবে বলে পরিবহণ সংগঠন এবং চেম্বার অফ কমার্সের তরফে এই দিন হুমকিও দেওয়া হয়েছে। |