ভর্তি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের বিক্ষোভ এবং ‘অশালীন’ আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। তার জেরেই আজ, মঙ্গলবার কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর হস্তক্ষেপে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল।
কলেজ শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, চলতি শিক্ষাবর্ষে বি কম বিভাগে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভর্তি করাতে চাইছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) পরিচালিত ছাত্র সংসদের নেতারা। কর্তৃপক্ষ ভর্তির যে ন্যূনতম মাপকাঠি করেছেন, তার থেকে কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ভর্তি করতে জোর করছেন তাঁরা। এ নিয়ে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গোলমাল বাধে। গত ৭ অগস্ট দীর্ঘক্ষণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করে রাখা হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, ছাত্র সংসদের কয়েক জন নেতা অশালীন আচরণ করেন। কলেজে অবাঞ্ছিত ব্যক্তির
প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, ভর্তি ঘিরে যে সব অভিযোগ উঠেছে তার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সরব হন শিক্ষকেরা।
ওই দাবিতেই সোমবার কলেজে আলোচনাচক্রের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, আলোচনা চলাকালীন টিএমসিপি-র নেতা ও সমর্থকেরা ঢুকে হইহুল্লোড় করে আলোচনা ভেস্তে দেন। শিক্ষকদের হুমকি দেওয়া হয়। অধ্যক্ষকে সব জানান তাঁরা। কলেজ সূত্রের খবর, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আলোচনার পরে ছাত্র সংসদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অধ্যক্ষ। তাতেও সমস্যা মেটেনি। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় সময় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় প্রথমে পঠনপাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে অবশ্য শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ ও উপাচার্যের নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় রাতে বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ তো ছিলই, তা ছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশ, কলেজের কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে হবে।” শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “শিক্ষা দফতর থেকে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষকে কলেজ খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তার অভাব আছে, এমন কোনও তথ্য আমার জানা নেই”
টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পর্কে কী বলছেন সংগঠনের নেতারা? সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “ওই কলেজে ছাত্র সংসদ কোনও অন্যায় দাবি করেনি।” উল্টে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘সিপিএম’ তকমা লাগিয়ে তিনি বলেন, “পঠনপাঠন বন্ধ রেখে সিপিএমের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আলোচনা করবেন, তা বরদাস্ত করা হবে না। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।” |