প্রাক্তন প্রধানের সই জাল করে আর্থিক তছরুপ করেছেন, এই অভিযোগ তুলে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই পঞ্চায়েতের সচিবকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন নতুন প্রধান, উপপ্রধান-সহ নির্বাচিত সদস্যেরা। ঘণ্টাখানেক ঘেরাও থাকার পরে ভুল ‘স্বীকার’ করে মুচলেখা দিয়ে ছাড়া পান অভিযুক্ত সচিব। সোমবার বোলপুরের সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে বোলপুরের বিডিও শেখর সাঁই বলেন, “বিষয়টি কী হয়েছে জানি না। আমার কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি।”
গত শুক্রবার ওই পঞ্চায়েতে নির্দলরা বোর্ড গড়েছেন। প্রধান হয়েছেন নির্দল সদস্য ফরিদা বিবি। নির্দলকে সমর্থন করা তৃণমূলের প্রতীকে জেতা পাপিয়া মুখোপাধ্যায় হন উপপ্রধান। এ দিন বিকেলে ওই পঞ্চায়েতের নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো নতুন প্রধান ও উপপ্রধান-সহ অন্য সদস্যদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন পঞ্চায়েতের সচিব আশিসকুমার ভট্টাচার্য। অভিযোগ, দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে ক্যাসবই ও পাসবই মেলাতে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানের সই ‘জাল’ করে আর্থিক অসঙ্গতির বিষয়টি নজরে আসে। |
বোলপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
|
ফরিদা বিবি ও পাপিয়াদেবীর অভিযোগ, “আশিসবাবু আগের প্রধানের সই ‘জাল’ করে টাকা নয়ছয় করেছেন। তাঁরা নানা আর্থিক অসঙ্গতি আমরা ধরে ফেলেছি। ওই পঞ্চায়েত সচিবের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনকে অভিযোগ জানাব।” এ দিকে এ বিষয়ে নতুন সদস্যদের কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি দাবি করে আশিসবাবুকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয় ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান জিতেন্দ্র অধিকারীকে। ফরিদা বিবিদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের সামনে জিতেন্দ্রবাবু ওই সইটি তাঁর করা নয় বলে জানিয়েছেন। পরে গোটা ঘটনাকে ‘স্লিপ অফ পেন’ দাবি করে মুচলেখা দেন অভিযুক্ত সচিব। পরে আশিসবাবু দাবি করেন, “দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়। আমি ভুলবশত ওই নামটি লিখেছিলাম। আমার ‘স্লিপ অফ পেন’ হয়েছে।”
বাম জমানায় রাজ্যের আদর্শ পঞ্চায়েতের পুরস্কার পেয়েছিল বোলপুরের সিয়ান-মুলুক গ্রাম পঞ্চায়ত। পরে সেই পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান সোমনাথ মুর্মু অবশ্য আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হন। সোমনাথবাবু জেলে থাকার সময়ে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব নেন জিতেন্দ্র অধিকারী। |