পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন অঘটন ঘটল ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকার মহম্মদবাজারের চড়িদা পঞ্চায়েতে। চড়িদা পঞ্চায়েতের কার্যালয় বৈদ্যনাথপুর গ্রামে। ১৬ অগস্ট পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন তৃণমূলের দেবদাস বাগদি। সোমবার তিনি কাজে যোগ দেওয়ার দিনই কার্যালয়ের মধ্যেই বিস্ফোরণ হয়। অভিযোগ ওঠে সিপিএমের দিকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মহম্মদবাজারের ওসি দেবব্রত সিংহ। এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা কিছু সময়ের জন্য সিউড়ি-দুমকা রাস্তা অবরোধ করেন।
এই পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ৮। তৃণমূল ৫ ও সিপিএম ৩টি আসন পায়। গত শুক্রবার পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর সংসদের আমাজোলা পাহাড়ি গ্রাম থেকে জিতেছেন দেবদাস বাগদি। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান অফিসে ঢুকে দুই কর্মীকে ১০০ টাকার নোট দিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসতে বলেন। প্রধান দেবদাস বাগদি বলেন, “প্রথম দিন বলে অফিসের দুই কর্মীকে মিষ্টি আনতে পাঠিয়েছিলাম। তাঁদের দোকানে পাঠিয়ে আমি শৌচাগারে যাই। হঠাৎ বিকট আওয়াজে তড়িঘড়ি বেরিয়ে এসে দেখি গোটা অফিস ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।” |
তখন চলছে খরুণ পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন। বাইরে উৎসুক জনতা।
|
আতঙ্কে তিনি পঞ্চায়েতে না ঢুকে একটি দোকানে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশের সঙ্গে তিনি পঞ্চায়েতের ভিতরে ঢোকেন। পুলিশ জানায়, প্রধানের টেবিলের উপর থেকে একটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। কোনও কর্মী বা লোকজন না থাকায় হতাহত হয়নি। আসবাবপত্রের কিছু ক্ষতি হয়েছে। প্রধানের দাবি, শৌচাগার থেকে বেরতেই দু’টি মোটরবাইকে করে ৬ জনকে পালাতে দেখেন তিনি। দু’জনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। এলাকার সিপিএম বিধায়ক ধীরেন বাগদি বলেন, “পুরো ঘটনা সাজানো। আমাদের কর্মী সমর্থকদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তবে মহম্মদবাজারের মতো কোনও ঘটনা না ঘটলেও পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের পর রামপুরহাট থানার কাষ্ঠগড়া গ্রামে সিপিএমের প্রাক্তন জোনাল সম্পাদকের উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরের ঘটনা। মৌখিকভাবে থানায় অভিযোগ করার পরে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি হন ওই প্রাক্তন জোনাল সম্পাদক আক্তাবুসজ্জামান। এ দিনই কাষ্ঠগড়া পঞ্চায়েতে লটারির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলের নিয়ামত শেখ। একই ভাবে উপপ্রধান নির্বাচিত হন ফরওয়ার্ড ব্লকের এক সদস্য। আক্তাবুসজ্জামানের অভিযোগ, “প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন পর্ব নির্বিঘ্নে শেষ হওয়ার পরে আমি একা বাড়ি ফিরছিলাম। পথে তৃণমূল কর্মীরা বিজয় উসবের নামে আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে।” |
মহম্মদবাজারের চড়িদা পঞ্চায়েতে প্রধানের টেবিলে পড়ে রয়েছে বোমা। |
সদ্য নির্বাচিত প্রধান নিয়ামত শেখ অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “মধুদাকে (আক্তাবুসজ্জামানের ডাক নাম) আমি শ্রদ্ধা করি। কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যে নির্বাচন পর্ব শেষ হতেই বিজয় উল্লাস করেন তাঁরা। তার মধ্যেই হয় তো কেউ কেউ উত্তেজনায় অনেক খারাপ কথা বললেও বলতে পারেন। তবে কেউ মারধর করেননি। তবে যাই ঘটে থাকুক তাঁর বাড়িতে গিয়ে আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।”
অন্য দিকে, ১৫ বছর পর সাঁইথিয়ার দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল তৃণমূলের। সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেস বোর্ড গঠন করে। এই পঞ্চায়েতের মোট আসন ৭ (তৃণমূল ৩, কংগ্রেস ২, সিপিএম ২)। এই আসনটি সংরক্ষিত।
|