ছ’ঘণ্টা স্কুলে আটকে থাকার পর এলাকাবাসীর চেষ্টায় উদ্ধার হল দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্র। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের হজরতপুর মালঞ্চা প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে সম্বারু ওঁরাও নামে ওই শিশুটি। ঘটনার জেরে স্কুলের ছয় শিক্ষককে শো-কজ করা হবে জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান বাচ্চু হাঁসদা। শিশুটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বলে তার বাবা মঙ্গল ওঁরাও জানিয়েছেন। তবে সে বর্তমানে সুস্থ।
এলাকাবাসীর কাছ থেকেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে মিড ডে মিল দেওয়ার পর তা খেয়ে নিজের শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে তৃতীয় শ্রেণির ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সম্বারু। এরপর স্কুল ছুটি হয়ে গেলেও দীর্ঘ সময় বাড়ি না ফেরায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তার বাড়ির লোকজন। চারিদিকে খুঁজে না পেয়ে রাত ৯টা নাগাদ স্কুলে যান তাঁরা। তালা বন্ধ থাকায় দেওয়াল টপকে স্কুলে ঢুকতে হয়। মঙ্গলবাবু দরজায় ধাক্কা দিলে তৃতীয় শ্রেণির ঘর থেকে সাড়া মেলে সম্বারুর। |
ঘটনার সময় স্কুলে ছিলেন না বলে জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক রূপলাল ওঁরাও। তিনি বলেন, “অসুস্থ থাকায় শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ স্কুল থেকে বেরিয়ে যাই। সম্বারু শুক্রবার মিড ডে মিল খাওয়ার পর তৃতীয় শ্রেণীর ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বলে শুনেছি। ওই দিন ছুটির পর সহপাঠীরাই শ্রেণিকক্ষে তালা দিয়েছিল। সহশিক্ষকদের অসতর্কতায় ঘটনাটি ঘটেছে। এ দিন খবর পেয়ে ওই পড়ুয়ার বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছি।”যদিও বাসিন্দারা এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানশিক্ষক স্কুলেই ছিলেন। ওই শিশুটির প্রতি শিক্ষকরা বিশেষ নজর রাখলে এমন ঘটনা ঘটতো না। এক বাসিন্দা রমজান আলি মিঞা বলেন, “স্কুল পরপর দু’দিন ছুটি পড়ে যাচ্ছে। সময়মতো উদ্ধার করা না গেলে বড় বিপদ ঘটতে পারত।”
মঙ্গলবাবুর অভিযোগ, “আমার ছেলে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, সেটা স্কুলের শিক্ষকরা ভাল করে জানেন। তবু তার প্রতি গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাব।” স্কুলের অভিভাবকেরাও বিডিওকে একটি গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেবেন বলে ঠিক করেছেন। ওই রাতেই বাসিন্দারা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্কুল সংসদের চেয়ারম্যানকে নালিশ করেন। রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান বাচ্চু হাঁসদা বলেন, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। ওই স্কুলের ছ’জন শিক্ষককে সোমবার শোকজ করা হবে।” |