জব কার্ড দেখিয়ে কাজের আবেদন করা যাবে তথ্যমিত্রে
কশো দিন কাজের প্রকল্পে কারও আবেদন যাতে ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে ‘তথ্যমিত্র’ কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য। কিন্তু তা কতটা কাজের হবে, তা নিয়ে সন্দেহ যাচ্ছে না।
যাঁদের হাতে কাজ নেই, তাঁদের বছরে অন্তত একশো দিন কাজ দেওয়ার জন্য মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইনে (এনআরইজিএ) বলা হয়েছে, যিনিই কাজ চেয়ে আবেদন করবেন, তাঁকেই কাজ দিতে হবে। তা দিতে না পারলে দিতে হবে বেকার ভাতা।
কিন্তু কাজের বেলায় দেখা যায়, পঞ্চায়েতগুলি কাজের আবেদনই গ্রহণ করছে না। নানা অছিলায় ফিরিয়ে দিচ্ছে গ্রামবাসীকে। ‘কাজ শুরু হলে খবর দেওয়া হবে,’ এমন কথাও বলা হয়। কোথায় কত জন কাজ চেয়েছেন, তার নথিভুক্তি না থাকায় কেবল ‘ঘনিষ্ঠদের’ কাজ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে বারবার।
রাজ্যের এনআরইজিএ কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার জানান, এ বার থেকে গ্রামে-গ্রামে ‘তথ্যমিত্র’ কেন্দ্রগুলিতে কাজের আবেদন নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আগামী ২০ অগস্ট তিনি সব জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হবে, তথ্যমিত্র কিয়স্কগুলিতে গিয়ে যে কোনও পুরুষ বা মহিলা নিজের জব কার্ড নম্বর দিয়ে, কবে কাজ চাইছেন তা জানালে ওই কিয়স্কের কর্মী তাঁর আবেদন এনআরইজিএ প্রকল্পের সর্বভারতীয় ওয়েবসাইটে তুলে দেবেন। তার ফলে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার থেকে পঞ্চায়েত দফতর, সকলেই বুঝতে পারবে, কোথায় কত মানুষ আবেদন করেছেন। পঞ্চায়েত কর্তারা কাজ দিতে না পারলে বেকার ভাতা দিতে বাধ্য থাকবে সরকার। তাই কাজ দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি হবে পঞ্চায়েতের উপরে।

বিষ্ণুপুরে একশো দিনের কাজ। ছবিঃ শুভ্র মিত্র।
এই ‘ডিমান্ড রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’ চালু হলে আবেদন অগ্রাহ্য করার ঝোঁক পঞ্চায়েতগুলির অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করছে পঞ্চায়েত দফতর। কিন্তু আবেদন না নেওয়া বা ‘আপলোড’ না করার জন্য তথ্যমিত্র কেন্দ্রগুলির উপরেও তো চাপ তৈরি করতে পারেন পঞ্চায়েত কর্মী বা রাজনৈতিক নেতারা? দিব্যেন্দুবাবুর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের ওয়েবসাইটে ঢোকার পাসওয়ার্ড তাঁরা আরও কিছু-কিছু এজেন্সিকে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। যে সব স্বনির্ভর গোষ্ঠী ‘ফেডারেশন’ করেছে, তাদের সদস্যেরা আগ্রহী হলে তাদেরও পাসওয়ার্ড দেওয়া যেতে পারে।
খেতমজুরদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য এই ব্যবস্থা? রাজ্যের সবচেয়ে বড় কৃষক তথা খেতমজুরদের সংগঠন, সিপিএম প্রভাবিত কৃষক সভার নেতা আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল অবশ্য বলেন, “তথ্যমিত্র মারফত আবেদন করার পদ্ধতিটাই তো জটিল। গরিব মানুষেরা কী ওই সব বোঝেন? তাঁরা তো আরও বেশি অন্যদের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। কত জায়গায় তথ্যমিত্র কেন্দ্র আছে তা নিয়েও আমাদের সন্দেহ রয়েছে।”
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে তথ্যমিত্র প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত এক আধিকারিক অবশ্য দাবি করেন, প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই কোনও না কোনও বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তি তথ্যমিত্র কেন্দ্রের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েছিলেন। অধিকাংশই পুনর্নবীকরণ করিয়েছেন। ওই কিয়স্কগুলির মাধ্যমে আবেদন নিতে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন তিনি।
নদিয়ার করিমপুর ২-এর বিডিও তাপস মিত্র বলেন, “আমার এলাকায় তিনটি তথ্যমিত্র কেন্দ্র আছে। তবে অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র তৈরি ছাড়া সেগুলি তেমন কাজে লাগে না। যদি একশো দিনের কাজ প্রকল্পে এগুলি জোড়া যায় ভাল হবে।” তবে তথ্যমিত্র কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো এবং পরিকাঠামো উন্নত করার দিকেও নজর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলার ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিসট্যান্ট গোবিন্দ সরকারও বলেন, “তথ্যমিত্র কেন্দ্রের পরিকাঠামো খুব ভাল নয়। আগে তার উন্নতি করা দরকার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.