পুলিশকর্মীকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে
ধৃত তিন চেক-জালিয়াত
বাঘের মুখে হাত ঢোকানো বোধহয় একেই বলে!
ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আচমকা তদন্তকারী এক অফিসারের কাছেই ফোন আসে প্রতারকদের। দেওয়া হয় ঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস। ‘ছিপ’ ফেলে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুষ্কৃতীদের তিন জনকে গ্রেফতার করে টালা থানার পুলিশ। ওই প্রতারণা-চক্রে আরও অনেকে জড়িয়ে রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। ধৃত পীযূষ পাল, সঞ্জীব দাসদের জেরা করা হচ্ছে। বছর চব্বিশ-পঁচিশের ওই যুবকেরা সকলেই মধ্যমগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। অন্য কোনও অপরাধের সঙ্গেও তারা জড়িত রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কী ভাবে প্রতারণা চালাত দুষ্কৃতীরা?
পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে ফোন করত পীযূষরা। কেউ রাজি হলে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যেত। ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে দু’টি ‘ব্ল্যাঙ্ক’ চেক নিত তারা। সঙ্গে ঋণের আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নেওয়া হত। চেক-এ নাম লেখার জায়গায় ইংরেজি হরফে ‘ক্যানসেল’ শব্দটি লিখে দিতে বলা হত ঋণগ্রহীতাদের। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শব্দটিকেই পরে নানা কায়দায় ও হাতের লেখার কারসাজিতে কারও নামে বদলে নিত প্রতারকেরা। টাকার অঙ্কও লিখে দিত সেখানে। ওই চেক নিয়ে গিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নেওয়া হত। জুন মাসে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এর পরেই শুরু হয় তদন্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকার পরিমাণ অবশ্য কখনওই ৫০ হাজারের উপরে লিখত না ওই দুষ্কৃতীরা। কারণ, সে ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র দাখিল করতে হত তাদের। কখনও ২৫ হাজার, কখনও ৪৬ হাজার, কখনও বা অন্য কোনও টাকার অঙ্ক চেকগুলিতে লিখত পীযূষ, সঞ্জীবেরা। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, এ ভাবে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। এ ধরনের আরও অভিযোগ পুলিশের কাছে পরবর্তী সময়ে আসতে পারে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। ধৃতদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ‘ক্যানসেল্ড’ লেখা আরও আট-দশটি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে তদন্তকারী এক অফিসারকে ফোন করে প্রতারকেরা। তাঁর কোনও ঋণের প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। বলা হয়, সহজেই ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। ফোনটা যে প্রতারকদের কাছ থেকেই এসেছে, তা বুঝতে পারেন ওই পুলিশকর্মী। তিনি কী কাজ করেন, সে কথা জানতে চাওয়ায় ওই অফিসার নিজেকে ‘ছোট ব্যবসায়ী’ বলে পরিচয় দেন। ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখান তিনি। নথিপত্র নিতে কোথায় যেতে হবে, তা জানতে চাইলে ওই পুলিশকর্মী টালা পার্ক এলাকার একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেন। পুলিশ জানায়, প্রতারকদের যাতে সন্দেহ না-হয়, সে জন্য নিজের চেকবই-ও সঙ্গে রেখেছিলেন ওই অফিসার। ফোনের কথামতো ওই জায়গায় পৌঁছয় এক দুষ্কৃতী। আশপাশেই সাদা পোশাকে ছিলেন অন্য পুলিশকর্মীরা। তখনই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে জেরার পরে খোঁজ মেলে বাকি দু’জনের।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.