হাওড়া স্টেশন চত্বর
সরকারি বাসগুমটি হয়ে গেল অবৈধ ট্যাক্সিস্ট্যান্ড
রকারি বাসস্ট্যান্ড হয়ে গিয়েছে বেআইনি ট্যাক্সিস্ট্যান্ড! তা-ও আবার ট্রাফিক পুলিশের অফিসের সামনে।
এমনটাই হয়েছে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সরকারি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। দালাল-চক্রের হাতে টাকা দিয়ে যে সব বেআইনি ট্যাক্সি হাওড়া স্টেশন এলাকায় চলত, যাদের সাঙ্কেতিক নাম ছিল ‘ফাইল’ ট্যাক্সি, তা পুলিশের তাড়ায় উঠে গিয়েছিল বছরখানেক আগে। অভিযোগ, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই বেআইনি ট্যাক্সি ফিরে এসেছে হাওড়ায়। তবে স্টেশন এলাকায় নয়, হাওড়া সেতুর কাছে খাস সরকারি বাসস্ট্যান্ডে।
বছরখানেক আগেও হাওড়া স্টেশনে ট্যাক্সি-দালালদের হাতে যাত্রীদের হয়রানি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এই হয়রানি রুখতে উদ্যোগী হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই স্টেশন এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্ব রেল-পুলিশের হাত থেকে চলে গিয়েছিল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের হাতে। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সির দালাল-চক্রের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে স্টেশন চত্বর থেকে ‘ফাইল’ ট্যাক্সি তুলে দিয়েছিল হাওড়া পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি দালাল-চক্রের হাত ধরে সেই বেআইনি ট্যাক্সি ফিরে এসেছে হাওড়া স্টেশন থেকে অল্প দূরেই ট্রাফিক গার্ড অফিসের সামনে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ‘ফাইল’ ট্যাক্সি চলছে সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। আবার রাতে চলছে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত। বাসস্ট্যান্ড চত্বরের এক দোকানদার বলেন, “সকালে ও রাতে ট্যাক্সিতে ভরে যায় এলাকা। তখন আর এটি বাসস্ট্যান্ড থাকে না।”
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সরকারি বাসস্ট্যান্ডে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্যাক্সি। ছবি: প্রদীপ আদক
হাওড়া স্টেশন ট্রাফিক গার্ড সূত্রে খবর, ওই চত্বর থেকে নিয়মিত ট্যাক্সি চলে গড়ে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার। এত সংখ্যক ট্যাক্সি শিয়ালদহ বা বিমানবন্দরেও চলে না। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছরখানেক আগেও হাওড়া স্টেশনের এই ট্যাক্সি নিয়েই একটি চক্র গড়ে উঠেছিল। হাওড়া স্টেশনে প্রি-পেড বুথে ট্যাক্সি না পাঠিয়ে সমান্তরাল ভাবে আর একটি স্ট্যান্ড চালাত তারা। প্রতি ট্যাক্সি থেকে ১০ টাকা করে নিয়ে কার্যত ট্যাক্সিচালকদের হাতে ইচ্ছামতো যাত্রী নেওয়া ও যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করার ‘অধিকার’ তুলে দিত এই চক্রটি। যার নিট ফল নিত্য যাত্রী-হয়রানির ঘটনা। পুলিশের দাবি, ওই চক্রটির তখন দৈনিক গড় আয় ছিল ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু সিটি পুলিশ দায়িত্বে নেওয়ার পরে ওই ফাইল ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে যায় চক্রের পাণ্ডাদের।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক ট্রাফিক অফিসার বলেন, “ফাইল ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ওই চক্রের পাণ্ডারা বারবার স্টেশন চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা ওদের ঢুকতে দিইনি। শেষে হাওড়া বাসস্ট্যান্ডে চক্রটি কাজ শুরু করেছে।”
কিন্তু ফের এই ‘ফাইল’ ট্যাক্সি শুরু হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল-প্রভাবিত ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন্স ইউনিয়ন’। ওই সংগঠনের সম্পাদক প্রবীর দাসমহাপাত্র বলেন, “চুক্তি মতো রাজ্য সরকারকে আমাদের প্রতি মাসে ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু কিছু ট্যাক্সিচালক অতিরিক্ত টাকার লোভে বাসস্ট্যান্ডে ‘ফাইল’ খাটতে চলে যাওয়ায় আমাদের প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথের ক্ষতি হচ্ছে।”
কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের অফিসের একেবারে সামনেই কী করে চলছে এই বেআইনি ট্যাক্সিস্ট্যান্ড?
হাওড়ার ডিসি (ট্রাফিক) দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “এই খবর আমার কাছে ছিল না। সামনে ট্রাফিক পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কী করে সেখানে বেআইনি ট্যাক্সিস্ট্যান্ড গজিয়ে উঠল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.