বিতর্ক উস্কে দেওয়া ছবি দেখলেন ডাক্তারেরা
ছুটির দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার প্রেক্ষাগৃহ থেকে বাংলা ছবি দেখে বেরোচ্ছেন দর্শকরা। সেই ভিড়ে আছেন ডাক্তারবাবুরাও। কিন্তু আম-জনতার ছুটি মানে কি রোগেরও ছুটি? হাসপাতালে কোনও রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে কে দেখবে তাঁকে?
উপস্থিত ডাক্তারবাবুদের কেউ কেউ এ প্রশ্নে একটু থমকালেন। কেউ হাসলেন। কেউ বললেন, “মোবাইল চালু। ইমার্জেন্সি কিছু হলেই চলে যাব।” কিন্তু ঠিক এই প্রশ্ন ঘিরেই ছবি শেষের পরে এক ঘণ্টা জমে উঠল ছবির পরিচালক-দ্বয়ের সঙ্গে ডাক্তারবাবুদের কথোপকথনে।
১৫ অগস্ট দুপুরে ‘অলীক সুখ’ ছবির একটি ‘ডক্টরস্ স্পেশ্যাল শো’-এর ব্যবস্থা করেন পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই ছবিতে ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে বারবার। যিনি আদর্শ ডাক্তার, তাঁর কাছে কি ‘ব্যক্তিগত প্রয়োজন’ বলে কিছু থাকতে পারে না?
কথার মাঝখানেই ফোন বাজল ইএনটি সার্জেন অর্জুন দাশগুপ্তের। কথা বলে ফেরত এলেন তিনি। তাঁর কথায়, “একটা অ্যাক্সিডেন্ট কেস এসেছে। আমার টিম কাজ করছে। তারা সামলাতে পারলে ভাল। কিন্তু যখন তারা মনে করবে আমাকেই দরকার, তৎক্ষণাৎ পৌঁছে যেতে হবে।”
ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ইমার্জেন্সির সময়ে হাসপাতালে পৌঁছতে পারেননি ‘অলীক সুখ’-এর নায়ক ডাক্তার কিংশুক গুহ। বাঁচানো যায়নি রোগিণীকে। চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বললেন, “হাসপাতাল থেকে বারবার ফোন আসছে, অথচ ডাক্তার যাচ্ছেন না, এমন কিন্তু সচরাচর হয় না। অন্য সব কাজ ফেলে ডাক্তার কিন্তু তখন রোগীর কাছেই ছোটেন।”
ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়ের মতে, “ডাক্তাররা অতিমানব নন। ৮-১০ ঘণ্টা টানা কাজ করে তাঁদের পক্ষে পরের রোগীকে ১০০ শতাংশ দেওয়া সম্ভব হয় না। এটা রোগীকে বুঝতে হবে, চেম্বার বাড়ানোর সময়ে এটা খেয়াল রাখতে হবে ডাক্তারকেও।”
গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ইন্দ্রনীল সাহা বলেন, “রোগীর মৃত্যু হলে ডাক্তারের তো কোনও লাভ হয় না! তিনিও মারাত্মক ট্রমার মধ্যে কাটান।” কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন কুণাল সরকারের প্রশ্ন, “ডাক্তার কি সমাজের বাইরের কোনও জীব? যেখানে সমাজের প্রত্যেক স্তরেই দুর্নীতি, সেখানে যাবতীয় কর্তব্যপরায়ণতা শুধু ডাক্তারের থেকেই কেন আশা করা হবে?” উপস্থিত ছিলেন ছবিতে ডাক্তারের চরিত্রাভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার। তাঁর অভিজ্ঞতায়, “মানুষ আর ভগবানের মাঝখানে দূতের ভূমিকাটা যেন ডাক্তারের। এটা অসম্ভব চাপের।”
কথায় কথায় উঠে এল, শুধু ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই যে রোগীদের অনেক কিছু বলার থাকে তা নয়, মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.