বাজারে ভিড়
দু’সপ্তাহ পরে স্বস্তি পাহাড়ে
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনের জেরে দু’সপ্তাহ জনজীবন স্তব্ধ থাকার পরে বৃহস্পতিবার, স্বাধীনতা দিবসে দার্জিলিং পাহাড়ের সর্বত্র উপচে পড়ে ভিড়। সকাল থেকেই এটিএমের সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে। দোকানে কেনাকাটা করতেই লাইন। কাকভোরে শিলিগুড়ির পথে দেখা যায় গাড়ির মিছিল। সকলের একটাই লক্ষ্য, যত দ্রুত সমতলে পৌঁছে বেশি পরিমাণ রসদ সংগ্রহ করা। শিলিগুড়ির রেস্তোরাঁ, হোটেলে ঠাসাঠাসি ভিড় দেখা যায় পাহাড়বাসীর। সন্ধ্যার পরে ফের পাহাড়ের পথে গাড়ির মিছিল।
শুক্রবার ওই ভিড় যেন দ্বিগুণ হয়ে যায়। কারণ, সকাল থেকেই পাহাড়বাসীর মধ্যে একটা আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে, ফের অচল হতে পারে পাহাড়। সে জন্য ছোট ট্রাকে ভরে ব্যবসায়ীরা আনাজপাতি নিতে লাইন দেন শিলিগুড়ির পাইকারি বাজারে। কয়েকটি এলাকার সবজি বাজারও যেন কিছুটা সময়ের জন্য চলে যায় পাহাড়বাসীদের দখলে। কালিম্পং থেকে ছোট ট্রাক নিয়ে এসেছিলেন ব্যবসায়ী নির্মল প্রধান। তিনি বললেন, “কখন, কী হবে তা বোঝা দায়। অন্তত এক মাসের খাবারদাবার মজুত করে রাখা ভাল হবে। সে জন্য ট্রাক ভাড়া করে এনেছি।”
কার্শিয়াঙের লাকপা শেরিং, দার্জিলিঙের চিনদ্রুপ লেপচার মতো কয়েকজন এলাকার বাসিন্দাদের থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে গোটা পাড়ার জন্য খাবারদাবার মজুতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রৌঢ় চিনদ্রুপ অতীতে জিএনএলএফের ৪২ দিনের বন্ধ দেখেছেন। সে যাত্রায় চাল, আলু থাকলেও নুন ফুরিয়ে গিয়েছি তাঁদের গোটা গাঁয়ের। নুন আনতে হেঁটে সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে যেতে হয়েছিল তাঁদের অনেককে। চিনদ্রুপ বলেন, “সে জন্য এলাকার ৬২টি পরিবারের লোকজন মিলে চাঁদা নিয়ে রসদ সংগ্রহ করে একটা জায়গায় রেখে দেব। যদি বন্ধ, কার্ফু না হয় তা হলে ভাগাভাগি করে নেওয়া হবে। আর হলে পরে সকলে মিলে রেশনের মতো অল্প করে খরচ করা হবে।”
এতসবের মধ্যেও পাহাড়ে কিন্তু হাতে গোনা পর্যটকদের দেখা মিলছে। যেমন ১৭ জন বাংলাদেশি পর্যটককে ম্যাল চৌরাস্তা, চিড়িয়াখানা ও হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে দেখা গিয়েছে। ট্যুর অপারেটর সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, পর্যটকদের দলটি সিকিম হয়ে দার্জিলিং ঘোরার কথা ছিল আগেই। কিন্তু, গোলমাল থাকায় তাঁরা পাহাড়ে পা দেননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই তাঁরা পাহাড়ে গিয়েছেন।
কিন্তু, ঝুটঝামেলার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে কজন পর্যটক আসতে চাইবেন? এই প্রশ্ন তুলে হোটেল মালিকদের অনেকে নিজেরাই হতাশা প্রকাশ করলেন। তাঁদের তরফে নানা বাবে মোর্চা নেতাদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে পুজোর মরসুমের কথা মাথায় রেখে আন্দোলনের গতি কমানোর অনুরোধও গিয়েছে। তাতে কাজের কাজ এখনও না হলেও মালিকরা কিন্তু হাল ছাড়েননি। কারণ, গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর নতুন ‘চিফ এক্সিকিউটিভ’ মনোনীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন চিফ মনোনীত হলে জিটিএ ফের সচল হতে পারে বলে মালিক পক্ষ আশা করছেন। এদিন জিটিএ-এর প্রধান সচিব আর ডি মিনা বলেছেন, “জিটিএ আইন মেনে শীঘ্রই নতুন চিফ মনোনয়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে।” পাশাপাশি, মোর্চার তরফে সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, “দিন দশেকের মধ্যেই হয়তো নতুন চিফ মনোনয়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
তাই রসদ সংগ্রহের পাশাপাশি ফের কিছুদিনের জন্য সব কিছু ঠিকঠাক চলতে পারে, এমন আশা দেখা যাচ্ছে গোটা পাহাড়েই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.