পাহাড় অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, বার্তা স্বাধীনতার অনুষ্ঠানেও
পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স যে বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেই বার্তাই যেন দিল রেড রোড। স্বাধীনতা দিবসের সকালে, রাজ্য সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় গত বছর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ঝলক তুলে ধরার যে প্রয়াস শুরু হয়েছে, এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এ বার ব্যাপারটা আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে পাহাড়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে। আলাদা রাজ্যের দাবিতে বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নতুন করে দার্জিলিং পাহাড়ে আন্দোলন শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের কালিপঙের ‘লেপচা কালচারাল গ্রুপ’-এর শিল্পীদের নিজস্ব পোশাকে নাচ, অথবা দার্জিলিঙের ‘বাকপা ছায়ম’ নৃত্যদলের অনুষ্ঠান যেমন মানুষ দেখেছেন, তেমনই কোচবিহারের ভাওয়াইয়া গান, জলপাইগুড়ির বৈরাতি নৃত্যের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিতে চেয়েছেন, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স আজও বাংলার সঙ্গে একাত্ম।
দার্জিলিং পাহাড় এক দিকে, অন্য দিকে জঙ্গলমহলে হিংসার আগুন নিভিয়ে শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন‘‘পাহাড় হাসছে, জঙ্গল হাসছে।’’ এর পরে অনেক জল বয়েছে। জঙ্গলমহল আপাতত শান্ত। কিন্তু তেলঙ্গানার প্রেক্ষাপটে পাহাড় অশান্ত। কোচবিহার, ডুয়ার্সেও আলাদা রাজ্যের দাবিতে ফের জোট বাঁধতে শুরু করেছে একাধিক সংগঠন। সরকারি সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে সরকারি তরফে স্বাধীনতা দিবসের সকালে রেড রোডের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের পাহাড়-সমতল, তরাই-ডুয়ার্স, জঙ্গলমহল যে মিলেমিশে রয়েছেসেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তাই হয়তো পাহাড়-ডুয়ার্স-তরাইয়ের অধিবাসীদের বর্ণাঢ্য পরিবেশনার পাশে পশ্চিম মেদিনীপুরের ধামসা-মাদল নিয়ে নাচের সঙ্গে পুরুলিয়ার ছৌ, বীরভূমের বাউলদের গান মিলেমিশে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিজস্ব ঘরানার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই মেলবন্ধনকে রাজনৈতিক দলের অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের কথায়, “সাগর থেকে পাহাড় মিলিয়ে বাংলার ঐক্যের ছবি আমরা দেখেছি স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে।” পাহাড় অশান্ত থাকা সত্ত্বেও সেখানকার লোকসংস্কৃতিকে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে তুলে ধরার উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও। তাঁর বক্তব্য “পাহাড়ে অশান্তির মধ্যেও সেখানকার মানুষের সাংস্কৃতিক চেতনা রাজ্যের বাকি মানুষকে দেখানো ভালই হয়েছে।”
তবে এই ধরনের আয়োজনে ‘আসল’ সমস্যা কতটা মিটবে তা নিয়ে সন্দিহান সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “গত বছরও বিভিন্ন জেলার সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ে অশান্তি নতুন করে হচ্ছে।” অবশ্য স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেও মমতা-সরকার যে পরিবর্তন এনেছে, তা স্বীকার করেছেন সেলিম। তাঁর কথায়, “আগে ১৫ অগস্ট রেড রোডে এ রকম সরকারি অনুষ্ঠান হত না। পরিবর্তনের সরকার আসার পরে এ ব্যাপারেও পরিবর্তন এসেছে।”
স্বাধীনতার অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোর্চার এক নেতার মন্তব্য, “নানা জায়গার শিল্পীদের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠান করানো নয়, তাঁদের হৃদয় কী চাইছে তাও বোঝার চেষ্টা করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.