সন্ধ্যা হয়ে গেলেও সময়মতো প্লাটফর্মে আলো জ্বালানো হচ্ছে না। আর এই অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে প্রতিনিয়ত টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের পকেট থেকে টাকা পয়সা মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। আবার এই অন্ধকারের সুযোগ নিয়েই ট্রেন থেকে ওঠানামা করার সময়ে যাত্রীদের গলার সোনার চেন, ঘড়ি, ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এমনই অভিযোগ পূর্ব রেলের শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী নিত্যযাত্রীদের।
সুন্দরবনের যে অংশ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পড়ে শুধুমাত্র সেখানেই নয়, ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী, সন্দেশখালি, ধামাখালি এইসব এলাকার মানুষেরও যাতায়াতের প্রধান উপায় হল ক্যানিং রেলস্টেশন। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশনটিতে পরিককাঠামোগত উন্নতি যতটা করার কথা ছিল তার কিছুই হয়নি। সুন্দরবনে ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য নেই কোনও ওয়েটিং রুম। শৌচালয়ের পাশ দিয়ে যেতে গেলে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়। ক্যানিং-বাসন্তী সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ার পর থেকে সুন্দরবনের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাজের সূত্রে যাতায়াত করেন। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের ঘন্টার পর ঘন্টা কাউন্টারের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে আবার বাইরের ফ্র্যানচাইজি থেকে বেশি দাম দিয়ে টিকিট কাটেন। নিত্যযাত্রীদের মধ্যে প্রতাপ পাত্র, দিবাকর মণ্ডল, ছন্দা মণ্ডলেরা বলেন, “ক্যানিং স্টেশন যেন নরককুণ্ড। কোনও পরিকাঠামো নেই। শৌচালয়ের নোংরা জল রাস্তায় এসে পড়ছে। ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়েও হয়রানির শিকার হিচ্ছি। মাত্র চারটি টিকিট কাউন্টার রয়েছে। টিকিট কাটতে গিয়ে অনেক সময় ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে।” |
নিত্যযাত্রীদের আরও অভিযোগ, সন্ধ্যা হয়ে গেলেও প্লাটফর্মে অনেক দেরিতে আলো জ্বালানো হয়। অন্ধকারে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। সন্ধ্যা হলেই স্টেশন চত্বরের আনাচে-কানাচে বসে নেশাগ্রস্তদের আড্ডা। সম্প্রতি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মোবাইল ফোন পকেট থেকে তুলে নেয় দুষ্কৃতীরা।
ক্যানিংয়ের স্টেশন ম্যানেজার স্বপনকুমার মজুমদার বলেন, “সন্ধ্যার পর থেকে প্লাটফর্মে যে আলো জ্বলে না তা আমাকে কেউ জানাননি। যাতে তাড়াতাড়ি আলো জ্বালানো হয় তার ব্যবস্থা করব।”
অন্যদিকে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “ক্যানিং স্টেশনে কী কী সমস্যা আছে তা খতিয়ে দেখে সেগুলির সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |