শনিবারের নিবন্ধ ২...
সঙ্গে থাকুন এখনই ফিরে আসছি
“উফ, ওই একটা বিজ্ঞাপনের বিরতির স্মৃতি মন থেকে মুছে গেলেই ভাল হয়,” প্রায় আঁতকে উঠে বলল ব্রাত্য।
তখনও শিক্ষামন্ত্রী নয়, তরুণ তুর্কি নাট্যকার সে সময়ে আমার ‘প্রতি-পক্ষ’ অনুষ্ঠানের নিয়মিত অতিথি। আর্কাইভ বলছে, তারিখটা ১২ মে ২০১০, পুরভোটের প্রচার তখন তুঙ্গে। সে বিরতিটা তখন নিতে হয়েছিল নিছক বাধ্য হয়েই, কারণ কংগ্রেসের নির্বেদ রায়-অরুণাভ ঘোষের সঙ্গে শিল্পী শুভাপ্রসন্নর তীব্র বাদানুবাদ, যা নেমে এসেছিল ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে। বিরতির আগেই ‘লাইভ’ অনুষ্ঠানের সুবাদে দর্শকরা শুনে ফেলেছিলেন ‘জালি’, ‘অসভ্য’, ‘দালাল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘মাল’-জাতীয় ‘অসংসদীয়’ শব্দের বহুল-বিষাক্ত ব্যবহার।
ভেবেছিলাম বিরতি নিলে অন্তত পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা হবে, কিন্তু কোথায় কী! গরম চাটু থেকে জ্বলন্ত উনুনে পড়ার প্রবাদের মতোই বিরতির ঘোষণা হতেই এক ‘বিদ্বজ্জন’ অন্য পক্ষকে ‘সারমেয়’ বলে ফেললেন।! ব্যস, তক্ষুনি হাতাহাতি বাধে আর কী! বিরতির পর ফিরে এসে অবশ্য অনুষ্ঠানের রাশ ধরেছিলাম শক্ত হাতে। নির্বেদ রায়ও মেজাজ হারানোর জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেন। তবে এই বিরতিটিতে বিশিষ্টজনের অশিষ্ট তরজা অবশ্য দর্শকরা নিশ্চয়ই ‘মিস’ করেননি।
তবে অনেকের মতে যে সিঙ্গুর প্রকল্পের জন্য বহুলাংশে বামেদের চৌত্রিশ বছরের রাজ্যপাট ‘মিস’ হয়ে গেল, কী করে ভুলি ঘটনাচক্রে তার সূত্রপাতটা হয়েছিল এমনই এক সাক্ষাৎকারের বিরতির সময় থেকেই! ১১ মে, ২০০৬। ২৩৫টি আসন বগলদাবা করে বামফ্রন্টের ঐতিহাসিক জয়ের ফল ঘোষণার দিন। যাঁর নেতৃত্বে জয়, সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। বিরতিতে একটা চিঠি-খবর এল। রতন টাটার। বুদ্ধদেববাবুর মুখে চওড়া হাসি “ওদের লোক পরশু সকালে আসছেন, দু-তিনটে জায়গা তাঁরা আগে এসে দেখে গিয়েছেন। আপনাদের আগে বলিনি।” ব্যস, এক্সক্লুসিভের ওপর এক্সক্লুসিভ! বিরতি শেষেই প্রশ্ন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সহাস্য উত্তরও “ভাল উপহার। পশ্চিমবঙ্গে শেষ পর্যন্ত একটা অটোমোবাইল ফ্যাক্টরি করার ডিসিশন নিয়েছেন ... ওই যে স্মলেস্ট কার।” বাকিটা ইতিহাস।
ইতিহাস হয়তো মনে রাখে না। কিন্তু কত যে স্বজনহারার বুকফাটা কান্না আর চোখের জলের বাঁধ দেওয়ার কঠিন কাজটাও বিরতিতেই করতে হয় পেশাদার সাংবাদিককে! চরম অসংবেদনশীলের মতো রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যুর পর প্রথম স্টুডিয়োতে আনতে হয়েছিল রিজের মা কিশওয়ান জাহানকে, সাংবাদিকতার স্বার্থেই। ক্রন্দনরত বৃদ্ধাকে বিরতিতে কিছুটা শান্ত করলেও সেদিন বিরতির পর ফিরে তিনি শুধু তিনটে শব্দই উচ্চারণ করতে পেরেছিলেন গোটা অনুষ্ঠানে, আর সেটুকুই নড়িয়ে দিয়েছিল ক্ষমতার ভিত “হামে ইনসাফ চাহিয়ে।” আজ আমিনুল ইসলামের বাবা মীর ইজারুল ইসলামকে ওই বিজ্ঞাপনের বিরতিতে শান্ত করতে করতে মনে হচ্ছিল, কত দ্রুত ঘটে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, অন্তত এ রাজ্যে।
অলঙ্করণ: সুমন চৌধুরী
তবে এ রাজ্যের রাজনীতিবিদরা সবাই জিনগত ভাবে রামগরুড় আর বিরতিতে তাঁরা সবাই শুধু গোমড়ামুখে পরস্পরকে মাপেন এটা ভাবলে কিন্তু ভুল করছেন। রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে বিরোধী দলের নেতা সদ্য পাশ করা ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছেন বা কয়েক মিনিট আগে তুলোধোনা করা প্রতিদ্বন্দ্বীকে মেয়ের বিয়ের কার্ড ধরিয়ে উষ্ণ নেমন্তন্ন করছেন অনুষ্ঠানের ‘ছোট্ট’ বিরতির সামান্য ফাঁকটুকুতে এমন ‘বড়’ হৃদয়বৃত্তির ঘটনাও আকছার ঘটে আমার চোখের সামনেই। “আমার কাছে স্টুডিয়োর বিতর্ক অনেকটা নাটকের মঞ্চের মতোই,” খোলা মনে এত দিনে মনের কথাটা বলল ব্রাত্য, “মঞ্চে উঠে যে-যার রাজনীতির ‘পার্ট’ বলা, তার পর বিজ্ঞাপনের বিরতিতে উত্তেজনার রেশটুকুও না রেখে একসঙ্গে চা-সিগারেট খাওয়া।” শিক্ষামন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, “প্রতিপক্ষ’ অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের বিরতিগুলোই আমাকে সহিষ্ণুতা শিখিয়েছে।”
অনুষ্ঠান চলাকালীন অসীম ধৈর্য নিয়ে বিরতির জন্য অপেক্ষা করার নজিরবিহীন শিক্ষা অবশ্য দেখেছি বছর দু’য়েক আগে, লন্ডনে। ভিক্টোরিয়া এমব্যাঙ্কমেন্ট-য়ে বিরিজ স্ট্রিটের দিকে পিঠ রেখে জমিয়ে বসে একটি মাল্টিক্যাম সাক্ষাৎকার নিচ্ছি ওখানকার পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা কিংবদন্তি নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্রর। প্রতি ফ্রেমে ব্যাকগ্রাউন্ডে হয় বিগ বেন, নয়তো হাউসেস অব পার্লামেন্ট। আবহর উত্তেজনায় খেয়ালই নেই লন্ডন পুলিশ বা কোনও প্রশাসনিক সংস্থার কাছ থেকে শু্যটিং-য়ের ন্যূনতম অনুমতিও নেওয়া হয়নি! পাক্কা এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকার যখন শেষ হল, হতবাক হয়ে দেখলাম লন্ডন পুলিশের উচ্চপদস্থ দুই আধিকারিক পিছনেই দাঁড়িয়ে আছেন লেন্সের নাগাল বাঁচিয়ে। অনুমতিপত্র নেই শুনে তাঁরা যে শুধু হাতে-গরম একটি অনুমতিপত্র ওখানেই সই করে দিলেন তাই নয়, সবিনয়ে জানালেন গত পঞ্চাশ মিনিট ধরে তাঁরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন শুধু একটা বিজ্ঞাপন বিরতির জন্য। কারণ অনুমতির খোঁজখবর নিতে গিয়ে তাঁরা টিভি সাক্ষাৎকারটির মাঝে ছন্দপতন ঘটাতে চাননি!
দলাদলিক্লিষ্ট এ রাজ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক অনুষ্ঠানে ছন্দপতনের ঘটনা লিখতে বসলে অবশ্য আর একটা মহাভারত হয়ে যাবে। ২০০৮-এর ২৪ ডিসেম্বর। নন্দীগ্রাম থেকে ‘লাইভ’ অনুষ্ঠান। হঠাৎই বেঁকে বসলেন তৎকালীন বিরোধী দলের মহারথীরা। কিছুতেই শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে বসবেন না। অতএব লম্বা একটা বিরতি নিয়ে ডেকরেটরকে দিয়ে দুটি মঞ্চ বানিয়ে কার্যত আলাদা করে অনুষ্ঠান করতে হল! কিংবা ওই বছরই রাস্তা কেটে বিচ্ছিন্ন লালগড় থেকে প্রথম টিভি শো। মঞ্চের উপর পরবর্তী কালে মাওবাদীদের গুলিতে নিহত ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি মোর্চার নেতা বাবু বসু, পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো এবং সিপিএম জোনাল কমিটির দোর্দণ্ডপ্রতাপ সম্পাদক অনুজ পাণ্ডে পাশাপাশি!
অনুষ্ঠানে এক যুবক তাঁর স্ত্রীর ওপর পুলিশি অত্যাচারের মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিল। পরের বিরতিতেই দেখলাম যুবকটিকে ঘিরে ধরে শাসকদলের পেশিশক্তির ধারকরা রীতিমতো গণধোলাই দিচ্ছে ওই লালগড় রামকৃষ্ণ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই! বিজ্ঞাপনের বিরতি দীর্ঘায়িত করে সেদিন উন্মত্ত গুণ্ডাবাহিনীর হাত থেকে বাঁচাতে সঞ্চালক ও টেকনিক্যাল টিমকে নামতে হয়েছিল মঞ্চ থেকে।
অথবা ধরুন রাজীব দাসের স্মৃতিতে বারাসতের কাছারি ময়দান থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়া সেই অনুষ্ঠান, যেখানে বিরতিতে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে পাক্কা দশ মিনিট ধরে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছিল (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। তবে এ সব কিছুকেই ছাড়িয়ে যেতে পারে ২০০৯-এ লোকসভা ভোটের আগে বারাসতের রবীন্দ্রভবন থেকে সরাসরি ‘বলুন সাংসদ’ অনুষ্ঠানে, বিজ্ঞাপনী বিরতির রাজনৈতিক তাৎপর্যে! ১৮ মার্চ সন্ধেবেলা প্রধান দলগুলোর প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠান বেশ জমে উঠেছে। খোশমেজাজে সবে দ্বিতীয় বিরতির ঘোষণা করেছি, এমন সময় মঞ্চে দু’দলের কিছু সমর্থক উঠে এল। নিজের নিজের সমথর্কদের সঙ্গে নেতারা মঞ্চ ছেড়ে পিছনের মেক-আপ রুমে আশ্রয় নিলেন শান্তিপূর্ণ ভাবেই। পনেরো মিনিটের মধ্যেই ম্যাজিকের মতো উত্তাল হয়ে উঠল বারাসতের পরিস্থিতি। গোটা জেলায় খবর ছড়িয়ে পড়ল দু’পক্ষের নেতারাই ‘আক্রান্ত’। বিরতিতে এমন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় আর কোনও সঞ্চালককে পড়তে হয়েছে কিনা জানা নেই। চোখের সামনে দেখছি দুই নেতাই সুস্থ শরীরে ফুর্তিতে আছেন। অথচ তাঁদের সমর্থকরা তাঁদের ওপর ‘নির্দয় আক্রমণ’-এর প্রতিবাদে গোটা জেলার রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে! স্বভাবতই সেদিন বিরতি থেকে আর অনুষ্ঠানে ফেরা যায়নি। তবে আসল চমকটা ছিল পর দিন সকালে। সংবাদমাধ্যমে দেখলাম দু’পক্ষের নেতাই অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রচণ্ড আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এক দলীয় মুখপত্র লিখল অনুষ্ঠানের সঞ্চালকই নাকি পরিকল্পনা করে বিজ্ঞাপন বিরতিতে নেতাকে আক্রমণের পরোক্ষ মদত জুগিয়েছেন! রাজনীতির বিরতিহীন রাজ্যে বিরতি নিয়েও এমন রাজনীতি হয়!
নির্বাচনী রাজনীতির উত্তাপে গোটা রাজ্য ফুটছিল তখন। তারিখটা ৭ মে, ২০০৯ রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোটপর্ব চলছে। স্টুডিয়োতে চলছে ‘কার দখলে দিল্লি’ অনুষ্ঠানের তুমুল তরজা। কয়েক মিনিট আগে কাঁথিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে সেই ভোটপর্বে প্রথম মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছেছে। লাইভ অনুষ্ঠানে রাজনীতির হেভিওয়েটদের সরাসরি প্রশ্ন করছেন উপস্থিত দর্শকরা, সঙ্গে তাল ঠুকছেন বিশিষ্টরাও। চাপানউতোর-ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাঝে প্রশ্ন করতে মাইক হাতে দাঁড়ালেন এক সুদর্শন যুবক। প্রথমেই নিজের পরিচয় দিলেন বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্য হিসেবে, প্রশ্নের লক্ষ্য, উপস্থিত তৃণমূল নেতা। মুহূর্তে বিস্ফোরণ! তাঁর আগ্রাসী প্রশ্নে বিনয়ের নিশ্চিত অভাব ছিল, উলটো দিকে প্যানেলেও ছিল ধৈর্যের অভাব। ব্যস, শুরু কর্কশতম বাকবিতণ্ডা! দু’পক্ষই বয়সের তফাত ভুলে প্রায় হাতাহাতির ভঙ্গিতে পরস্পরের দিকে তেড়ে গেল! আমাকেও কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটা বিরতি দিয়ে যুযুধানদের থামিয়ে শান্তি-রক্ষার্থে স্টুডিয়ো সম্পূর্ণ খালি করে (দর্শকদের হাত জোড় করে তখনকার মতো অন্য ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন অফিসের কর্মীরা) অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়েছিল সেদিন। এই ঘটনা আজ লেখার পর দু’পক্ষের পরিচয় না-দেওয়াটা ঘোর দুষ্টুমি হবে। তৃণমূল পক্ষে ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে সমর্থন করেছিলেন কংগ্রেস নেতা নির্বেদ রায়। আর বাম ছাত্র নেতাটি তখনও খুব পরিচিত না হলেও আজ চেনা মুখ। শতরূপ ঘোষ।
হাতাহাতির গল্প থেকে এ বার আসি হাত ধরাধরির গল্পে। বিতর্কিত অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘বিবেক বনাম দল’। দিনটা ১১ জানুয়ারি, ২০১০। সেই প্রথম প্রকাশ্যে লাইভ স্টুডিয়োতে বসে দলের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন কবীর সুমন। প্রত্যক্ষ উপলক্ষ, তাঁর ‘ছত্রধরের গান’টি নিয়ে দলে তীব্র আপত্তি। মতবিরোধ মেটাতে আসা ব্রাত্য বসু প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন, বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙা’র জন্য নরমে-গরমে বেশ দু’কথা শুনিয়ে দিয়েছেন কবীরকে, কিন্তু ‘গানওলা’ সেদিন যুক্তিতে-তর্কে-রসবোধে অপ্রতিরোধ্য মেজাজে। প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা জমাটি বাক্যুদ্ধের অনুষ্ঠানের বিরতি। পার্থবাবুকে কবীর সুমনের সটান প্রশ্ন, “যা নিয়ে এত কথা বলছেন, সেই ছত্রধরের গানটা কি আপনি শুনেছেন?” পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘না’ বলাতে হাসতে হাসতে কবীরের বাউন্সার, “আপনাদের একটা অসুবিধে কী বলুন তো, তৃণমূলের অধিকাংশ লোকই গান শোনে না।” পার্থ: “আপনি বাঁকা কথা বলছেন কেন?” কবীর: “এটা কি দলবিরোধী কথা?” পার্থ: “না দলবিরোধী নয়, তবে বাঁকা। তৃণমূলের অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন, যাঁরা গান শোনেন। মজার কথা, এই তপ্ত কথোপকথনটা যখন চলছে, কবীর সুমন সপাটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফেলেছেন আর মুখচোখে প্রবল অস্বস্তি সত্ত্বেও পার্থবাবু তা ছাড়াতে পারছেন না। বিরতি নিয়ে ফেরার পর দর্শকরা দেখলেন, বিনয়ী কবীর সুমন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে বলছেন, “হঠাৎ এত অফিশিয়াল হয়ে যাচ্ছেন কেন, আপনি তো বন্ধু।” ক্যামেরায় তখন কবীরের হাতের মুঠোয় ধরা পার্থর হাতের ক্লোজ শট। মাস্টার স্ট্রোক আর কাকে বলে!
অবশ্য এই মুহূর্তে বেসরকারি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের বিরতি ঘণ্টায় ১২ মিনিটে বেঁধে দেওয়ার ট্রাই-এর নির্দেশ নিয়ে জোর বিতর্ক। ভাবছি এ নিয়ম লাগু হলে বিরতির মজাটাতেই বিরতি আসবে না তো? গত চার বছর অবশ্য ‘প্রতি-পক্ষ’ অনুষ্ঠানের বহু পর্বেই টানা দু’ঘণ্টা বিরতিহীন অনুষ্ঠান চলেছে। তাতে দর্শক স্বস্তি পেলেও এক সুরসিক রাজনীতিক শো-চলাকালীন হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়েছিলেন ‘ডায়াবেটিস! এক বার বিরতি দে মা...ঘুরে আসি...’
যাই হোক, লেখাটা কত শব্দের মধ্যে রাখতে হবে ‘পত্রিকা’ বিভাগ থেকে তাড়াহুড়োয় সেটা জেনে নেওয়া হয়নি। অনেক লিখলাম। এ বার একটা বিরতি নেব কিন্তু। প্লিজ...।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.